প্রতীকী ছবি
শরীরের বাইরে বেরিয়ে থাকা মাংসের থলির মধ্যেই ছিল যকৃৎ, পাকস্থলী এবং অন্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। জন্মগত সেই সমস্যা নিয়েই দিন কাটছিল চোদ্দো বছরের কিশোরীর। অবশেষে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ভিতরে ঢুকিয়ে তাকে সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে দিল নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।
নদিয়ার বাসিন্দা হাফিজুল শেখের মেয়ে অসীমা খাতুনের ছোট থেকেই পেটের বাইরে একটি মাংসের থলি ঝুলে থাকত। কাপড় দিয়ে সেটিকে পিঠের সঙ্গে বেঁধে সব কাজ করত সে। কিন্তু বয়সের সঙ্গে সঙ্গেই বাড়তে থাকে থলিটির আয়তন। সেই সঙ্গে মাঝেমধ্যে পেটের প্রবল যন্ত্রণায় কষ্ট পেত অসীমা। সমস্যা বাড়তে থাকায় সম্প্রতি মেয়েকে এনআরএসে ভর্তি করেন হাফিজুল। হাসপাতালের শল্য বিভাগের শিক্ষক-চিকিৎসক উৎপল দে জানান, পরীক্ষা করে বোঝা যায়, মেয়েটি ‘এগজ়োমফেলস মেজর’ রোগে আক্রান্ত। মাংসের থলির আকার প্রায় ১০ সেন্টিমিটার।
সিটি স্ক্যানে দেখা যায়, ওই থলির ভিতরে যকৃৎ, পাকস্থলী, ক্ষুদ্রান্ত্র এবং পিত্তাশয় রয়েছে। সম্প্রতি তিন ঘণ্টা ধরে আস্ত্রোপচার করেন উৎপলবাবু, সোমদেব শীল, রিয়া আগরওয়াল এবং অ্যানাস্থেটিস্ট অর্চনা রায়। চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, পেটের প্রাচীর তিনটি মাংসপেশি দিয়ে তৈরি। তার প্রথমটিকে কেটে ওই সমস্ত অঙ্গ পেটের ভিতরে ঢোকানো হয়। তার পরে সেই পেশি দিয়েই নতুন করে পেটের উপরের অংশ তৈরি করা হয়। উৎপলবাবু জানাচ্ছেন, মায়ের গর্ভে ভ্রূণের শরীরের বাইরেই যকৃৎ, ক্ষুদ্রান্ত্র, বৃহদন্ত্র-সহ অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তৈরি হয়। পেটের উপরের অংশ বা প্রাচীর তৈরির সময়ে সেগুলি ভিতরে ঢুকে যায়। কিন্তু ওই কিশোরীর ক্ষেত্রে কোনও ভাবে তা হয়নি।