১২ দিনের মাথায় অনশন ভাঙলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারা। — নিজস্ব চিত্র।
টানা ২৬৪ ঘণ্টার অনশন। ১২ দিনের মাথায় সেই অনশন ভাঙলেন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারা। যে নির্বাচনের দাবিতে অনশনে বসেছিলেন তাঁরা, সে প্রসঙ্গে পড়ুয়ারা জানিয়েছেন, নিজেদের ভোট তাঁরা নিজেরাই করিয়ে নেবেন। ২২ তারিখ হবে সেই নির্বাচন। যদিও ওই নির্বাচনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। ছাত্র সংগঠন অল ইন্ডিয়া ডেমোক্র্যাটিক স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন (এইআইডিএসও) ইতিমধ্যেই জানিয়েছে, তারা এই নির্বাচনে অংশ নেবে না।
ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে সোমবার মিছিল করেন মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়ারা। সঙ্গে যোগ দেন সমাজকর্মী ও চিকিৎসক বিনায়ক সেন, অম্বিকেশ মহাপাত্র-সহ ডক্টরস ফোরামের চিকিৎসকেরা। মিছিল শেষে অনশন ভাঙার কথা ঘোষণা করেন পড়ুয়ারা। বিনায়কের হাতে ফলের রস খেয়ে সেই অনশন ভাঙেন তাঁরা।
আন্দোলনকারীদের তরফে জানানো হয়েছে, নির্বাচনের পুরো প্রক্রিয়া তাঁরাই দেখবেন। বিনায়ক, অম্বিকেশ, বোলান গঙ্গোপাধ্যায়, সুজাত ভদ্রকে নজরদারির অনুরোধ জানিয়েছেন পড়ুয়ারা। রাজি হয়েছেন বিশিষ্টরা। আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের তরফে জানাো হয়েছে, ভোট যাতে স্বচ্ছভাবে হয়, সে কারণেই বিনায়কদের নজরদারির অনুরোধ করা হয়েছে। তাঁরা এও জানিয়েছেন যে, এই বিষয়ে পুলিশকে জানানো হবে।
আন্দোলনকারী এক ছাত্র অনিকেত কর বলেন, ‘‘গণতন্ত্র রক্ষার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধেই নিয়েছি। নিজেদের ভোট নিজেরাই করব। ১৯২৮ সালে এ রকমই হয়েছিল।’’ চিকিৎসক বিনায়ক বলেন, ‘‘যে ভাবে নির্বাচন বাতিল করা হয়েছিল, এটা ঠিক তার বিপরীত হল। এটা বড় একটা জয়। এই আন্দোলন পথ দেখাবে। একেবারেই নতুন বিষয়।’’
প্রসঙ্গত, ভোট হয় কলেজ কাউন্সিলের তত্ত্বাবধানে। এ ক্ষেত্রে ভোট পরিচালনা করবেন পড়ুয়ারাই। তাই এই ভোটের বৈধতা নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এও প্রশ্ন উঠছে যে, সব পক্ষ এতে আদৌ যোগ দেবে কিনা!
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে সংসদ নির্বাচনের দাবিতেই চলছিল আন্দোলন। গত সোমবার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি ভোটের আশ্বাস দিলেও অনশন থামাননি পড়ুয়ারা। অচলাবস্থা কাটাতে স্বাস্থ্য সচিবের সঙ্গে বার বার কথা বলেন অধ্যক্ষ ইন্দ্রনীল বিশ্বাস। রফাসূত্র না মেলায় তিনি জানিয়ে দেন, কলেজে আর ঢুকবেন না। কাজ করবেন স্বাস্থ্য ভবন থেকেই। অবশেষে সোমবার উঠল অনশন। যদিও নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেল।