দাবি: অধ্যক্ষের ঘরের সামনে অনশনে পড়ুয়ারা। ফাইল চিত্র
হস্টেলের দাবিতে মঙ্গলবার থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের ছয় পড়ুয়া অধ্যক্ষের ঘরের সামনে আমরণ অনশনে বসলেন।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে সপ্তাহখানেক ধরেই দফায় দফায় অবস্থানে বসেছেন তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের প়ড়ুয়ারা। বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ হাসপাতাল চত্বরে ঢুকে অধ্যক্ষকে বার করে আনে। এর পরেই বিক্ষোভ আরও বা়ড়ে। পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগ, পুলিশ আন্দোলনকারীদের হেনস্থা করেছে। সোমবার এর প্রতিবাদে মিছিল হয়। হাসপাতালের অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ব্লকের উল্টো দিকে অস্থায়ী অবস্থান মঞ্চ তৈরি হয়। কিন্তু পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগ, রাতে ফের পুলিশ ঢোকে। ভেঙে দেওয়া হয় অবস্থান মঞ্চ। মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন হস্টেলে এমবিবিএস প্রথম বর্ষের প়়ড়ুয়ারা থাকবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু তৃতীয় ও চতুর্থ বর্ষের পড়ুয়ারা এখনও হস্টেল পাননি বলে দাবি। পুরনো যে হস্টেলে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে তা প্রায় ভেঙে প়ড়ছে। অনেকেই বারান্দায় থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। তাঁধের প্রশ্ন, এগারো তলা বিল্ডিং কেন শুধুমাত্র নতুন পড়ুয়াদের জন্য বরাদ্দ হবে? যদিও কর্তৃপক্ষের যুক্তি এমসিআই-এর নিয়ম মেনে র্যাগিং রুখতে হস্টেল কমিটি প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের আলাদা রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ইতিমধ্যে সোমবার রাতে স্নাতকোত্তর পর্বের ছাত্রীদের নতুন হস্টেলের একাংশে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। আন্দোলনকারীদের একাংশের প্রশ্ন, এমসিআইয়ের নিয়ম মেনে যদি ব্যবস্থা করা হয় তা হলে একই বিল্ডিংয়ে স্নাতকোত্তর ছাত্রী এবং স্নাতক স্তরের ছাত্র কী ভাবে থাকেন! পাশাপাশি আন্দোলনকারীদের একাংশ জানাচ্ছেন, এমবিবিএস কোর্সের দ্বিতীয় বর্ষ থেকেই প্রত্যেক পড়ুয়াকে অ্যান্টি-র্যাগিং ফর্ম ভরতে হয়। স্নাতকোত্তর ক্ষেত্রে তা হয় না। কলেজ কর্তৃপক্ষ দ্বিতীয়, তৃতীয় বর্ষের ছাত্রদের ভরসা করতে না পারলে স্নাতকোত্তর স্তরের পড়ুয়াদের উপরে কী ভাবে ভরসা রাখছেন? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, এমসিআইয়ের নিয়ম মেনেই স্নাতকোত্তরের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের রাখা হয়। কারণ অ্যান্টি-র্যাগিং নিয়মের আওতায় স্নাতকোত্তরের পড়ুয়ারা পড়েন না।
এ দিন আন্দোলনকারী ছাত্রদের একাংশ অভিযোগ করেন, অধ্যক্ষের সঙ্গে বারবার তাঁরা কথা বলার চেষ্টা করলেও তিনি কোনও কথা বলতে চাইছেন না। বরং হাসপাতাল চত্বরে পুলিশ ও শাসক দলের কর্মীদের দিয়ে ছাত্রছাত্রীদের হেনস্থার চেষ্টা চলছে।
কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ উচ্ছল ভদ্র অবশ্য বলেন, ‘‘ছাত্রদের অনশন তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছি। আলোচনার মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান সম্ভব। প্রথম বর্ষের ভর্তি প্রক্রিয়া মিটলেই পড়ুয়াদের সমস্যা নিয়ে কথা বলব। কর্তৃপক্ষকে একটু সময় দিলেই সব সমস্যা মিটে যাবে।’’