TET

অনশনমঞ্চে এসে সমর্থন কলেজের পড়ুয়াদের

যাদবপুরের ভূতত্ত্বের ছাত্র উমায়ের আহমেদ জানান, ন্যায্য অধিকারের জন্যই দাবি জানাচ্ছেন ওঁরা। ওঁদের প্রতি তাই উমায়েররা সহমর্মী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২২ ০৭:১৭
Share:

সংহতি: আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের সমর্থনে এগিয়ে এলেন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও (ডিভাইডারে বসে)। বুধবার, করুণাময়ীতে। ছবি: আর্যভট্ট খান।

করুণাময়ীর অনশন মঞ্চে চাকরিপ্রার্থীদের পাশে দাঁড়ালেন অন্যান্য কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। বুধবার তাঁদের উপস্থিতি যদিও ছিল পিছনের সারিতে। কিন্তু তা আন্তরিক বলেই মনে করছেন অনশনকারীদের অনেকে। চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে তাঁরা শুনছিলেন তাঁদের অভাব-অভিযোগ। তখন সেখানে সহমর্মিতা জানাতে উপস্থিত বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃত্ব ও শিক্ষক সংগঠন। সেই ভিড় এড়িয়ে পিছনের সারি থেকে পড়ুয়ারা জানালেন, তাঁরা এসেছেন অনশনকারীদের সহমর্মী হতে।

Advertisement

প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোলের ছাত্র অনমিত্র দাস বলেন, ‘‘এঁদের নিয়োগ না-হওয়া নিয়ে আমরা যথেষ্ট চিন্তিত। কারণ, আমরাও পড়াশোনা করছি। পড়াশোনা শেষ করে চাকরি পেতে হবে। অনেকেই হয়তো স্কুলশিক্ষকের হতে আবেদন করব। আগের প্রার্থীদের নিয়োগ নিয়ে যদি জটিলতা থাকে, তা হলে আমাদের নিয়োগও তো সহজ রাস্তায় হবে না। আমাদেরও হয়তো এ ভাবেই রাস্তায় বসে আন্দোলন করতে হবে। অথচ এঁরা সবাই যোগ্য প্রার্থী বলেই শুনছি।’’ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী তপতী সোরেন বলেন, “কেন জটিলতা তৈরি হচ্ছে? ২০১৪ এবং ২০১৭ সালের প্রার্থীরা একসঙ্গে ইন্টারভিউ দিলে অ্যাকাডেমিক স্কোরে তফাত হয়ে যাবে শুনেছি। কারণ, ২০১৪ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সিলেবাসের ভিত্তিতে যে নম্বর উঠত, ২০১৭ সালে সিলেবাস পরিবর্তন হওয়ায় নম্বর বেশি উঠেছে। ফলে ইন্টারভিউয়ে অ্যাকাডেমিক স্কোরে ২০১৪ সালের প্রার্থীরা পিছিয়ে পড়তেই পারেন।”

যাদবপুরের ভূতত্ত্বের ছাত্র উমায়ের আহমেদ জানান, ন্যায্য অধিকারের জন্যই দাবি জানাচ্ছেন ওঁরা। ওঁদের প্রতি তাই উমায়েররা সহমর্মী। উমায়ের বলেন, “সব থেকে খারাপ লাগছে, বেশ কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলে জানলাম,তাঁদের বয়স ৪০ হয়ে গিয়েছে। এক জন মহিলা চাকরিপ্রার্থীর সঙ্গে কথা হল। তিনি যখন পরীক্ষা দিয়েছিলেন, তখন তাঁর বিয়ে হয়নি। এখন তাঁর তিন বছরের শিশু আছে। এঁদের তো আন্দোলন-বিক্ষোভ করতে করতেই বয়স পেরিয়ে যাচ্ছে।”

Advertisement

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী অনুষ্কা দাস বলেন, ‘‘কয়েক দিন ধরে সংবাদমাধ্যম থেকে সব জানতে পারছিলাম। সকালেই বন্ধুরা ঠিক করি যে, আজ করুণাময়ীর অনশন মঞ্চে যাব। শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। অথচ যাঁরা শিক্ষক হতে চান, তাঁরা রাস্তায় শুয়ে আছেন!’’ অনুষ্কার কথার মধ্যেই অসুস্থ হয়ে পড়েন এক অনশনকারী। অনুষ্কা, উমায়েরা ছুটে যান সেখানে। সৃজন সিংহ নামে ম্যাকাউটের এক ছাত্র বলেন, “আমরা ওঁদের জন্য হয়তো কিছু করতে পারব না, কিন্তু সহমর্মিতা তো দেখাতে পারব।”

সমর্থন জানাতে বাদ যায়নি ছোটরাও। বসিরহাটের চাকরিপ্রার্থী তাজউদ্দিন আহমেদ অনশন করছেন। এ দিন তাঁর সঙ্গে ছিল বছর দশেকের মেয়ে সারিয়া ইসলাম ইফাত। তাজউদ্দিন জানান, তাঁর স্ত্রী কাজে বাইরে গিয়েছেন। তাই মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন। তবে চুপচাপ থেকে নয়, চাকরিপ্রার্থীদের স্লোগানে রীতিমতো গলা চড়াচ্ছিল ছোট্ট সারিয়া। ওইটুকু মেয়েকে স্লোগান দিতে দেখে হাততালি দিচ্ছিলেন উমায়েররাও। তাজউদ্দিন বলেন, ‘‘এই পড়ুয়াদের সঙ্গে আজই আলাপ হল। ওঁদের পাশে থাকা আন্দোলনে উৎসাহিত করছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement