সন্দীপন নায়েক।
মাকে ছেলে জানিয়েছিল, বন্ধুদের সঙ্গে বাড়ির কাছে পুকুরে স্নান করতে যাবে। বারণ করেছিলেন মা। কিন্তু শোনেনি বছর বারোর বালক। ঘণ্টাখানেক পরে পাড়ার লোকের আর্তনাদে বাড়ি থেকে বেরিয়ে এসে মা জানতে পারলেন, ছেলে আর নেই। পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে হরিদবপুর থানা এলাকার উস্তাদ আমির আলি খান সরণির একটি পুকুরে স্নান করতে নেমে ডুবে মৃত্যু হয়েছে সন্দীপন নায়েক নামে ওই বালকের।
পুলিশ সূত্রের খবর, বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান সন্দীপন কুঁদঘাটের একটি বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছিল। তার বাবা সঞ্জীব নায়েক রাজ্য সরকারের চুক্তিভিত্তিক কর্মী। ঘটনার সময়ে তিনি বাড়ি ছিলেন না। মায়ের নিষেধ সত্ত্বেও এ দিন তিন বন্ধুর সঙ্গে পুকুরে স্নান করতে যায় সাঁতার না জানা সন্দীপন।
স্থানীয় সূত্রের খবর, স্নান করতে নেমে অন্য বন্ধুরা সন্দীপনকে তলিয়ে যেতে দেখে সাহাষ্যের জন্য চিৎকার করেছিল। আর্তনাদ শুনে এক যুবক ঝাঁপিয়েও পড়েন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি।
এ দিন ফোনে সঞ্জীববাবু বলেন, ‘‘ছেলে পুকুরে কোনও দিন যায়নি। দুপুরে পুকুরে স্নান করবে বলে বাড়ি থেকে বেরোনোর সময়ে ওর মা আপত্তি করে। ওই সময়ে স্ত্রী আমাকে সে কথা জানিয়েওছিল। তাই কিছু ক্ষণ পরে স্ত্রীর কান্না শুনেই বুঝতে পারি, বড় বিপদ হয়েছে।’’
স্ত্রীর ফোন পেয়েই সল্টলেকের অফিস থেকে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন সঞ্জীববাবু। এ দিকে পুলিশ আসার আগেই স্থানীয়েরা সন্দীপনকে উদ্ধার করে বাঘা যতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার পর থেকেই শোকস্তদ্ধ সন্দীপনের পাড়া। প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, পড়াশোনায় বরাবর ভাল ছাত্র সন্দীপন, ছবি আঁকতেও ভালবাসত। কাঁদতে কাঁদতে সন্দীপনের বাবা বলছিলেন, ‘‘ছেলেটাকে সাঁতার শেখাব ভাবছিলাম। তার আগেই সব কিছু শেষ হয়ে গেল!’’
প্রসঙ্গত, সোমবার বিকেলেই আলিপুরের ডি এল খান রোডে খেলতে গিয়ে পুকুরে নেমে দুই কিশোরের মৃত্যু হয়েছিল। সেই দুর্ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের একই ভাবে মৃত্যুর ঘটনা ঘটল শহরে।