কড়া হাতে পরিস্থিতি সামলাচ্ছে পুলিশ। ছবি— পিটিআই।
‘হটস্পট’-এ থাকা কলকাতার স্পর্শকাতর এলাকাগুলি চিহ্নিত করে কড়া হাতে পরিস্থিতি সামলাচ্ছে কলকাতা পুলিশ। বিভিন্ন এলাকায় ড্রোনের মাধ্যমে যেমন নজরদারি চলছে, তেমনই শহরের অলিগলিতেও টহল দিতে শুরু করেছে পুলিশ। অনেক এলাকায় নতুন করে লাগানো হচ্ছে সিসি ক্যামেরাও। কন্ট্রোল রুম থেকে ২৪ ঘণ্টার নজরদারি রাখা হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতাকে ১৪ দিনের মধ্যে ‘রেড’ থেকে ‘অরেঞ্জ জোন’-এ আনতে কড়া হাতে পরিস্থিতির মোকাবিলার নির্দেশ দিয়েছেন। সে পথে হেঁটে অনেকটাই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা গিয়েছে। তবে কড়াকড়ি করতে গিয়ে, বাড়াবাড়ি যেন না হয়— মুখ্যমন্ত্রীর সেই নির্দেশও মাথায় রাখা হচ্ছে বলে জানান এক পুলিশ কর্তা।
কী ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ?
লকডাউন ভেঙে কেউ অপ্রয়োজনে রাস্তায় বেরলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে যেমন, তেমনই কেউ সমস্যায় পড়লে পুলিশের মানবিক মুখও দেখা যাচ্ছে। কলকাতার বেশ কয়েকটি এলাকায় আগের থেকে আরও কড়াকড়ি করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, লকডাউনের পর গত ২৩ মার্চ থেকে ২১ এপ্রিলের মধ্যে ১০ হাজারেরও বেশি আইনভঙ্গকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রায় ১ হাজার গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। মাস্ক না পরে বেরলেও গ্রেফতার করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: রাজ্যে করোনায় মৃত্যু বেড়ে ১৫, সক্রিয় আক্রান্ত পৌনে তিনশো
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক কলকাতাকে হটস্পট জোনে রেখেছে। রাজ্যের তরফে সে ভাবে চিহ্নিত করা না হলেও, বেশ কয়েকটি এলাকাকে স্পর্শকাতর হিসাবে দেখা হচ্ছে। ওই এলাকাগুলিতেই বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর।
পুলিশের সঙ্গে কলকাতা পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরাও এলাকায় গিয়ে বাসিন্দাদের শারীরিক পরিস্থিতির বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছেন। বিভিন্ন এলাকায় স্থানীয় বাসিন্দাদের নিয়ে তৈরি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপেও থাকছেন পুলিশকর্মীরা। যে কোনও প্রয়োজনে ২৪ ঘণ্টাই পুলিশের তরফে সাহায্যও মিলছে। তবে লকডাউন ভেঙে যাঁরা রাস্তায় বেরচ্ছেন কোনও কারণ ছাড়াই, তাঁদের কোনও ভাবেই ছাড়়া হচ্ছে না।
নাকা চেকিং থেকে শুরু করে ড্রোনে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। তাতে অনেক জায়গাতেই ফল মিলছে। আইনভঙ্গকারী গাড়িচালকদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী মামলা করছে ট্রাফিক পুলিশ। প্রয়োজনে গাড়ি বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ১৯ হাজার ছুঁইছুঁই দেশে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা, মৃত বেড়ে ৬০৩
এরই পাশাপাশি শহরের বাজারগুলিতে যাতে ভিড় না হয়, সে দিকে বিশেষ করে নজর দেওয়া হচ্ছে। বাজারে কেউ এলে মাস্ক অবশ্যক। নিময় না মানলে, তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা হচ্ছে। বাজারের সামনে জায়গা থাকলে পুলিশের তরফে সুরক্ষারেখা টেনে ফাঁকা ফাঁকা করে বসানো হচ্ছে বিক্রেতাদের। এ বিষয়ে ক্রেতাদেরও সচেতন করা হচ্ছে।