রক্তদানের পরে বেসরকারি হাসপাতালের সেই কর্মীরা। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
সরকারি হাসপাতালের পরে রক্তদানে নজির গড়লেন বেসরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরাও। দুর্ঘটনায় জখম এক যুবককে বাঁচানোর জন্য বম্বে গ্রুপের রক্ত সংগ্রহ করতে দাতার বাড়িতে পৌঁছে যেতেও দ্বিধা করেননি এসএসকেএম কর্তৃপক্ষ। আর কোভিড আবহে সঙ্কটজনক রোগীকে বাঁচাতে রক্তদাতা হিসেবে এগিয়ে এলেন চিনার পার্কের একটি বেসরকারি হাসপাতালের কর্মীরা।
বাগুইআটি থানা এলাকার চার্নক হাসপাতালে ওই যুবককে গত ২০ জুলাই ভর্তি করানো হয়েছিল। হাসপাতাল সূত্রের খবর, বছর আটত্রিশের ওই যুবকের বাঁ হাতে পচন ধরায় অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। পাশাপাশি, কিডনির অসুখে আক্রান্ত ওই যুবকের কোভিড সংক্রমণও হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে সপ্তাহখানেক আগে রোগীর বাঁ হাতে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন ওই বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকেরা। অস্ত্রোপচারের আগে চিকিৎসক সপ্তর্ষি রায় জানান, রোগীর জন্য চার ইউনিট রক্ত জোগাড় করতে হবে। এমনি সময়ে সাধারণত, ‘এ’ পজ়িটিভ গ্রুপের রক্ত জোগাড় করতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু করোনা আবহে সেই গ্রুপের রক্ত জোগাড় করতে গিয়েই নাজেহাল অবস্থা হয় বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সমাজকর্মীরা জানিয়েছেন, শিবির হলেও করোনার ভয়ে সে ভাবে দাতা পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে অনেক সময়েই প্রয়োজন মতো রক্ত জোগাড় করতে গিয়ে ব্লাড ব্যাঙ্কগুলি সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে।
আরও পড়ুন: গাড়িচালক পরিচয়ের আড়ালে টাকা চুরির কারবার
ওই বেসরকারি হাসপাতালের জেনারেল ম্যানেজার ঈপ্সিতা কুণ্ডু জানান, অনেক কষ্টে একটি বেসরকারি ব্লাড ব্যাঙ্ক শর্তসাপেক্ষে ওই গ্রুপের রক্ত দিতে রাজি হয়। তাদের দাবি ছিল, ‘এ’ গ্রুপের রক্তের বিনিময়ে দাতা দিতে হবে। কিন্তু রোগী কলকাতার বাসিন্দা না হওয়ায় তাঁর পরিজনদের পক্ষে দাতা জোগাড় করা সম্ভব ছিল না। সে কথা জানার পরেই চার্নকের কর্মীরা দাতার ভূমিকা নিতে রাজি হয়ে যান। প্রয়োজনীয় রক্ত জোগাড় হওয়ার পরে অস্ত্রোপচার শুধু সফলই হয়নি, রোগীও আপাতত ভাল আছেন বলে জানিয়েছেন বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এ দিন বেসরকারি হাসপাতালের কর্ণধার ঈপ্সিতা বলেন, ‘‘সঙ্কটের সময়ে কর্মীরা যে ভাবে রোগীর পরিজন হয়ে উঠলেন, তার জন্য আমরা গর্বিত।’’
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)