Subhas Sarobar

Subhas Sarobar: গাছ কাটা নিয়ে বিতর্ক এ বার সুভাষ সরোবরে

অ্যাকাডেমি তৈরি করতে পরিবেশবিধি অমান্য করে সরোবরের ভিতরে গাছ কাটা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল খোদ পুলিশের বিরুদ্ধেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:৪৩
Share:

সুভাষ সরোবর চত্বরে চলছে নির্মাণ। বুধবার। নিজস্ব চিত্র।

গত মাসেই সুভাষ সরোবরে রোয়িং অ্যাকাডেমির উদ্বোধন করেছিল কলকাতা পুলিশ। প্রকল্পের কাজ বর্তমানে চলছেও। নির্মীয়মাণ অ্যাকাডেমিতে পুলিশকর্মী বা তাঁদের পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি জনগণও অংশ নিতে পারবেন বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়েছিল। তবে সেই অ্যাকাডেমি তৈরি করতে পরিবেশবিধি অমান্য করে সরোবরের ভিতরে গাছ কাটা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠল খোদ পুলিশের বিরুদ্ধেই।

Advertisement

যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে পুলিশের দাবি, সরোবরের পরিবেশ রক্ষার্থে তারা বদ্ধপরিকর। ওখানে কোনও গাছ কাটা হয়নি। কয়েকটি ছোট গাছ সরানো হয়েছে। কলকাতার পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র বুধবার জানিয়েছেন, সরোবরে রোয়িং অ্যাকাডেমি-সহ একাধিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে নাগরিকদের যুক্ত করে সেখানকার সার্বিক পরিবেশের উন্নয়নের চেষ্টা করা হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘পরিবেশ রক্ষায় কলকাতা পুলিশ বদ্ধপরিকর। তবে প্রকল্পের বাস্তবায়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত ঠিকাদার সংস্থার ত্রুটি থাকলে তা দেখে দ্রুত সংশোধন করা হবে। পরিবেশ রক্ষার জন্য যা যা করণীয়, করা হবে।’’

তবে পরিবেশকর্মীদের একাংশের বক্তব্য, গাছ সরানো হয়নি। সরোবরের ভিতরে সংশ্লিষ্ট নির্মাণের জন্য একাধিক বড় গাছ কাটা হয়েছে। পরিবেশকর্মীদের সংগঠন ‘সবুজ মঞ্চ’-এর সদস্যেরা বুধবার সুভাষ সরোবর পরিদর্শন করেন। সরোবরের সবুজ ধ্বংসের বিরুদ্ধে তাঁদের তরফে ফুলবাগান থানায় অভিযোগও দায়ের করা হয়। যদিও লিখিত অভিযোগে শুধু বেআইনি নির্মাণের কথা বলা হয়েছে। পুলিশকে সরাসরি দায়ী করা হয়নি।

Advertisement

মঞ্চের সম্পাদক নব দত্ত জানাচ্ছেন, রবীন্দ্র সরোবরের মতো সুভাষ সরোবরেও রোয়িং হোক, তাতে কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু সরোবর দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (কেএমডিএ) তরফে গাছ কাটার অনুমতি দেওয়া হয়েছে কি না, তা প্রশ্নযোগ্য। তাঁর কথায়, ‘‘অনেক প্রশ্নের মতো প্রকল্পের পরিবেশগত প্রভাবের মূল্যায়নের (এনভায়রনমেন্ট ইম্প্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট) তথ্যও পাওয়া যায়নি। পুলিশের তদারকিতেই সম্ভবত এখানে পরিবেশবিধি অমান্য হচ্ছে।’’

কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, গাছ কাটার বিষয়ে তাঁরা ওয়াকিবহাল নন। তা ছাড়া, ওই বিষয়টি রাজ্য বন দফতরের অধীনে। সংস্থার এক কর্তার কথায়, ‘‘কলকাতা পুলিশ দায়িত্বশীল। নিয়ম লঙ্ঘন করে তারা কোনও কাজ করবে না। সুভাষ সরোবরে নানা ধরনের অসামাজিক কাজকর্মের ব্যাপারে সবাই অবগত। সেখানে পুলিশের কোনও প্রকল্প চালু হলে সরোবরের সার্বিক পরিবেশের উন্নতি হবে।’’ গাছ কাটার অনুমতি প্রসঙ্গে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, বিষয়টি তিনি খোঁজ নিয়ে দেখছেন। তাঁর কথায়, ‘‘গাছ কাটার অনুমতি এখন দফতর দেয় না। যেটা দেওয়া হয়, তা হল স্থানান্তর করার। অর্থাৎ, এক জায়গা থেকে গাছ তুলে নিয়ে অন্যত্র তা বসানোর।’’

রোয়িং-এর ফলে সরোবরের জলে আলোড়ন ওঠার এখনও দেরি রয়েছে। তবে তার আগে গাছ কাটা বিতর্কের জেরে আলোড়ন শহরের পরিবেশবিদ মহলে!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement