ফাইল চিত্র।
সম্পত্তিকর আদায়ের দায়িত্ব কি এ বার বেসরকারি সংস্থার হাতে তুলে দিতে চায় পুর প্রশাসন?
মঙ্গলবার পুর ভবনে কর মূল্যায়ন দফতরের একটি বৈঠকের পরে তেমনই গুঞ্জন শুরু হয়েছে। ওই বৈঠকে ছিলেন ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ, যিনি কর মূল্যায়ন দফতরেরও দায়িত্বে। পুরসভা সূত্রের খবর, বকেয়া সম্পত্তিকরের পরিমাণ দীর্ঘদিন ধরে বাড়তে বাড়তে দাঁড়িয়েছে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকায়। প্রতি বছর তা আরও বাড়ছে। যা আদায় করা কঠিন হয়ে পড়েছে পুর অফিসারদের পক্ষে। সেই বকেয়া কর আদায়েই পেশাদারি সংস্থার সহায়তা নেওয়ার কথা ভাবছে পুর প্রশাসন।
এ দিন অতীনবাবু জানান, কর আদায়ে পেশাদার একটি দল রাঁচী থেকে এ দিন পুর ভবনে এসেছিল। বৈঠকে তাঁরা একটি পাওয়ার পয়েন্ট প্রোজেক্ট দেখান। ওই দলের সদস্যেরা রাঁচী পুরসভায় এই কাজ করেছেন। তবে কলকাতার মতো বড় পুরসভায় তাঁরা সেই কাজ করতে কতটা সক্ষম হবেন, আলোচনা করেই সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কর আদায়ের দায়িত্ব দেওয়া হলে সংস্থাটিকে কমিশনও দিতে হবে বলে জানান অতীনবাবু।
এ দিকে, এই খবর চাউর হতেই পুর অন্দরে প্রশ্ন উঠছে, তবে কি পুর প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট দফতর কর আদায়ের কাজে ব্যর্থ? কেন বাইরের লোককে দিয়ে সম্পত্তিকর আদায় করতে হবে? অতীতে কখনও পুরসভায় এমন ঘটেনি বলেও অভিযোগ করেছেন বিরোধী দলের প্রকাশ উপাধ্যায়, দেবাশিস মুখোপাধ্যায়-সহ একাধিক কাউন্সিলর।
পুরসভা সূত্রের খবর, কর মূল্যায়ন দফতরে আগে মাত্র এক জন চিফ ম্যানেজার ছিলেন। কর আদায়ের পরিকাঠামো জোরদার করতে বছর তিনেক আগে তিন জন চিফ ম্যানেজারের পদ তৈরি করা হয়। তার পরেও আশানুরূপ পরিমাণ আদায় হচ্ছে না। চলতি বছরে পুরসভার সম্পত্তিকর আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০২০ কোটি টাকা। কিন্তু এখনও পর্যন্ত ৭০০ কোটি টাকাও আয় হয়নি। উপরন্তু রয়েছে বকেয়া সম্পত্তিকর। উল্লেখ্য, পুরসভার আয়ের প্রধান উৎস হল সম্পত্তিকর। তা আদায় না হওয়ায় ভাঁড়ারে টান পড়ছে পুর প্রশাসনের। সব দিক ভেবেই পেশাদার সংস্থাকে দিয়ে কর আদায়ের পথে হাঁটতে চায় পুর প্রশাসন। এমনই ইঙ্গিত মিলেছে অতীনবাবুর কথায়। যদিও তিনি জানিয়েছেন, দফতরের অফিসারেরা পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার পরেই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।