Liluah

প্রতিবন্ধী ছেলে ও বৃদ্ধকে মার, অধরা অভিযুক্তেরা

কুঞ্জপাড়ার তস্য গলির মধ্যে অর্ধনির্মিত একটি একতলা বাড়িতে ২০ বছরের শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে থাকেন বৃদ্ধ মনোরঞ্জন সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২০ ০৩:০০
Share:

প্রতীকী ছবি

টর্চের জোরালো আলো চোখে ফেলায় ক্ষীণ দৃষ্টির প্রতিবন্ধী যুবক রেগে গিয়ে গালিগালাজ করেছিলেন এলাকার অন্য কয়েক জন যুবককে। সেই ‘অপরাধে’ ওই যুবকের বাড়ির দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে তাঁকে ও তাঁর ৬৫ বছরের বৃদ্ধ বাবাকে লাঠি আর বাঁশ দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে পালিয়ে গিয়েছিল তারা। ওই ঘটনার পরে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন বৃদ্ধ। নিরাপত্তা চেয়ে আবেদনও করেছিলেন। কিন্তু অভিযোগ, এলাকায় এখনও বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে অভিযুক্তেরা। আতঙ্কে কার্যত গৃহবন্দি বাবা ও ছেলে।

Advertisement

ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার লিলুয়া থানা এলাকার বেলগাছিয়া কুঞ্জপাড়ায়। কুঞ্জপাড়ার তস্য গলির মধ্যে অর্ধনির্মিত একটি একতলা বাড়িতে ২০ বছরের শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী ছেলেকে নিয়ে থাকেন বৃদ্ধ মনোরঞ্জন সরকার। তিনি পেশায় রাজমিস্ত্রির জোগাড়ে। স্ত্রী মারা গিয়েছেন বছর পাঁচেক আগে। দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। পুলিশ জানায়, মানসিক ভারসাম্যহীন ওই যুবক রাস্তায় বেরোলে তাঁকে প্রায়ই নানা ভাবে বিরক্ত করত এলাকার কিছু লোক। খেপে গিয়ে ওই যুবকও গালিগালাজ করতেন। খবর পেলে বৃদ্ধ বাবা এসে তাঁকে বুঝিয়ে ঘরে ফিরিয়ে নিয়ে যেতেন।

আমপানে ক্ষতিগ্রস্ত বাতিস্তম্ভ মেরামতির কাজ চলছিল গত সোমবার রাত ১০টা নাগাদ। অভিযোগ, ওই সময়ে পাড়ার কয়েক জন যুবক ছাদে দাঁড়িয়ে থাকা প্রতিবন্ধী যুবকটির চোখে টর্চের আলো ফেলতে থাকে। আজন্ম চোখের সমস্যায় ভোগা ওই যুবক উত্তেজিত হয়ে গালিগালাজ শুরু করেন। তখনকার মতো বিষয়টি মিটে গেলেও রাত প্রায় ১২টা নাগাদ ওই যুবকের বাড়ির দরজা ভেঙে চড়াও হয় কয়েক জন যুবক। অভিযোগ, মনোরঞ্জনবাবুর গলা টিপে ধরে তারা। তাঁর ছেলেকে মেঝের উপরে ফেলে প্রবল আক্রোশে মারতে থাকে সকলে। মারধর করা হয় বৃদ্ধকেও। ভাঙচুর করা হয় জিনিসপত্র। পড়শিরা খবর পেয়ে ছুটে এলে ওই যুবকেরা পালিয়ে যায়।

Advertisement

ওই ঘটনার পরে লিলুয়া থানায় হামলাকারী তিন যুবকের নামে অভিযোগ দায়ের করেন বৃদ্ধ। কিন্তু অভিযুক্তেরা বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ তাঁর শুক্রবার তাঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙা দরজা কোনও রকমে দড়ি দিয়ে আটকানো। প্রতিবন্ধী যুবকের পিঠে মারধরের ক্ষতচিহ্ন। মনোরঞ্জনবাবু বললেন, ‘‘ওরা সে দিন আমাদের মেরেই ফেলত। খুব আতঙ্কে রয়েছি।’’

হাওড়া সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘ওই যুবকের বিরুদ্ধেও এলাকার মহিলাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। খুব দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement