তৈরি হচ্ছে সৌরালোকিত যাত্রীছাউনি। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য।
সৌরশক্তি কাজে লাগিয়ে শহরে আধুনিকমানের বাসছাউনি তৈরি করছে কলকাতা পুরসভা। দক্ষিণ কলকাতার উদয়শঙ্কর সরণির ধারে এই যাত্রীছাউনিটি তৈরির কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান ও বিজ্ঞাপন) দেবাশিস কুমার বলেন, “শহরে প্রথম এই ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। প্রকল্পটি চালু হলে যাত্রীছাউনি আলোকিত করতে বিদ্যুতের খরচ কমবে।”
পুরসভা সূত্রে জানানো হয়েছে, উদয়শঙ্কর সরণিতে অনেক দিন ধরেই যাত্রীছাউনির দাবি ছিল। বাসিন্দাদের একাংশ জানান, পুরকর্তৃপক্ষকে এই বিষয়ে বার বার বলা সত্ত্বেও কোনও কাজ হয়নি।
পুরকর্তৃপক্ষ জানান, দরপত্রের আবেদন করলেও কোনও বিজ্ঞাপন সংস্থা এগিয়ে আসেনি। বাধ্য হয়ে এলাকার লোকেরাই একটি বাসস্ট্যান্ড তৈরি করেন। এর পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এই জায়গায় সৌরালোকিত বাসস্ট্যান্ড তৈরি হবে। এই প্রকল্পটিকে একটি ‘পাইলট প্রজেক্ট’ হিসেবেই বিবেচনা করা হবে। স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের যুবকল্যাণ ও আবাসনমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বিধায়ক উন্নয়ন তহবিল থেকে এই প্রকল্পের জন্য ছয় লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেন। পুরসভার বিজ্ঞাপন দফতরই এই কাজ করছে।
স্থানীয় কাউন্সিলর তপন দাশগুপ্ত বলেন, “একটি সংস্থা থেকে সৌরালোকিত বাসস্ট্যান্ড তৈরির প্রস্তাব আসে। পুরসভা রাজি হয়েছে।” পুরসভা সূত্রে খবর, এলাকাটি বেদখল হয়ে গিয়েছিল। স্থানীয় কাউন্সিলর তথা ১০ নম্বর বরো চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে এখান থেকে জবরদখল সরানো হয়। এর পরে পুরসভা নিয়ম মেনে বেসরকারি সংস্থা (ফ্রিড)-কে প্রকল্প রূপায়ণের দায়িত্ব দেয়।
অরূপবাবু বলেন, “এই পাইলট প্রজেক্ট সফল হলে অন্য জায়গায়ও ব্যবহার করা হবে।” সৌরশক্তি বিশেষজ্ঞ সাধনকুমার ঘোষ বলেন, “যাত্রীছাউনিতে সৌরশক্তির ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ। এতে দূষণও কমবে।” যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মধুমিতা রায় বলেন, “সৌরশক্তি পুরোপুরি কাজে লাগানোর জন্য নির্মাণের ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মানতে হয়। এখানে সব মানা হয়েছে।”
ফ্রিড-এর সম্পাদক সোমনাথ পাইন বলেন, “এটি পরিবেশবান্ধব প্রকল্প। প্রকল্পটি সফল হলে সৌরশক্তি সম্পর্কে সচেতনতা বাড়বে।” এর পাশাপাশি লোকশিল্পীদের কাজে লাগিয়ে এলাকার সামগ্রিক উন্নয়ন এবং সবুজায়নও হবে।