Durga Puja 2023

পঞ্চমীতেই জনজোয়ার কলকাতায়! উৎসবমুখী মানুষের ঢল দেখা গেল অপেক্ষাকৃত ছোট পুজোতেও

মহালয়ারও আগে থেকে একাধিক মণ্ডপে মানুষের ঢল আভাস দিয়েই রেখেছিল যে, উৎসবের পরবর্তী দিনগুলিতে কী পরিমাণ ভিড় হতে পারে। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ক্রমবর্ধমান ভিড় সেই আভাসকেও ছাপিয়ে গেল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:৪০
Share:

সব পুজো মণ্ডপে উৎসবমুখী মানুষের ঢল। —ফাইল চিত্র।

চড়া রোদ উপেক্ষা করে দুপুর থেকেই ভিড় জমতে শুরু করেছিল একাধিক মণ্ডপে। সন্ধ্যা নামতেই সেই ভিড় জনজোয়ারের চেহারা নিল পঞ্চমীতে। রাত যত বাড়ল, শহরের রাজপথ থেকে পুজো মণ্ডপ— সর্বত্রই বাড়ল উৎসবমুখী মানুষের ঢল। কেউ কেনাকাটা করতে এসে মণ্ডপের লাইনে দাঁড়ালেন, কেউ দল বেঁধে প্রতিমা দর্শন করলেন অফিসের ব্যাগ কাঁধে নিয়েই। পঞ্চমীতেই মণ্ডপ থেকে রাস্তা দখলে গেল আমজনতার।

Advertisement

দেবীপক্ষ শুরু হয়ে গেলেও এখনও দুর্গার বোধন হয়নি। যদিও তাতে দর্শনার্থীদের দমানো যায়নি। বরং, মহালয়ারও আগে থেকে একাধিক মণ্ডপে মানুষের ঢল আভাস দিয়েই রেখেছিল যে, উৎসবের পরবর্তী দিনগুলিতে কী পরিমাণ ভিড় হতে পারে। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ক্রমবর্ধমান ভিড় সেই আভাসকেও ছাপিয়ে গেল। শহরের বড় বাজেটের পুজোর পাশাপাশি এ দিন দর্শনার্থীদের ভিড় টানল ছোট বাজেটের পুজোগুলিও। ভিড়ের চাপ দেখে কোনও পুজো কমিটি এক দিন আগেই রাস্তায় স্বেচ্ছাসেবক নামাল, কোনও পুজো কমিটি পুলিশ ডেকে পরিস্থিতি সামাল দিল। ভিড়ের চাপে সন্ধ্যা থেকেই শহরের একাধিক রাস্তায় দেখা যায় গাড়ির লম্বা লাইন। বহু রাস্তায় গাড়ির গতি ছিল শ্লথ। রাস্তায় পুলিশকর্মীদের পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করতে দেখা গেলেও তাতে গাড়ির জট কাটানো যায়নি। বিড়ম্বনা বেড়েছে পাতালপথেও। সন্ধ্যার দিকে পরিস্থিতি এমন হয় যে, ভিড়ের চাপে দরজা বন্ধ করতে একাধিক স্টেশনে অতিরিক্ত কয়েক মিনিট করে দাঁড়িয়ে থাকে ট্রেন।

এ দিন দুপুর থেকে দক্ষিণের রাসবিহারী অ্যাভিনিউ সংলগ্ন একাধিক মণ্ডপে ছিল থিকথিকে ভিড়। সন্ধ্যার পরে তা বাড়ে কয়েক গুণ। একডালিয়া এভারগ্রিন থেকে শুরু করে সিংহী পার্ক, দেশপ্রিয় পার্ক, ত্রিধারা— দর্শনার্থী টানার দিক থেকে একে অপরকে সমানে সমানে টক্কর দিয়েছে। সন্ধ্যায় জুতো হাতে করে খালি পায়ে বান্ধবীদের সঙ্গে দেশপ্রিয় পার্কের মণ্ডপ দেখে বেরোচ্ছিলেন এক তরুণী। জুতো হাতে কেন? উত্তরে বললেন, ‘‘যা ভিড়! ঠেলাঠেলিতে ছিঁড়বে না? ভেবেছিলাম একটু ফাঁকায় ফাঁকাই দেখব, কিন্তু কোথায় কী! যে দিকে তাকাচ্ছি, সে দিকেই শুধু কালো মাথা। আগামী বছর থেকে মহালয়ায় প্রতিমা দর্শন করব।’’

Advertisement

দর্শনার্থীদের ঢল নেমেছিল চেতলা অগ্রণী, সুরুচি সঙ্ঘ, ৬৬ পল্লি, মুদিয়ালি, শিবমন্দির-সহ কসবার একাধিক পুজোতেও। সুরুচির পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা কিংশুক মিত্র বললন, ‘‘যত মানুষ পঞ্চমীতে আমাদের মণ্ডপমুখী হয়েছেন, মনে হচ্ছে যেন সারা কলকাতায় একটাই প্রতিমা! পুলিশ তো চেষ্টা করছেই, আমাদের নিজস্ব নিরাপত্তাকর্মীদের নামিয়েও ভিড় সামলাতে বেগ পেতে হয়েছে। পুজো শুরুর আগেই এমন হবে, আমরা ভাবিনি।’’ ভিড় সামলাতে এ দিন রীতিমতো ঘাম ছুটে যায় কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদেরও। গড়িয়াহাট মোড়ে কর্তব্যরত এক পুলিশকর্মী বললেন, ‘‘দুপুর থেকে যে ভিড় শুরু হয়েছে, রাতেও তা কমেনি। পঞ্চমীতেই এই অবস্থা। সপ্তমী থেকে নবমী কী হবে, সেটাই ভাবছি।’’

পঞ্চমীর ভিড়ের নিরিখে দক্ষিণের সঙ্গে এ দিন সমানে পাল্লা দিয়েছে উত্তরের হাতিবাগান সর্বজনীন, কুমোরটুলি পার্ক, বাগবাজার, গৌরীবেড়িয়া সর্বজনীন, তেলেঙ্গাবাগান, বৃন্দাবন মাতৃমন্দির-সহ একাধিক পুজো। শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা সেরে চলেছে মণ্ডপ দর্শনও। হাতিবাগানে পুজোর শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা সেরে অনেকেই আশপাশের কয়েকটি মণ্ডপ দেখে নিচ্ছেন। কেনাকাটার ব্যাগ হাতে হাতিবাগান সর্বজনীনের মণ্ডপের সামনে লাইনে দাঁড়ানো বীথি কর্মকার বললেন, ‘‘দিনের বেলায় কেনাকাটা করতে এসে মণ্ডপ দেখে গেলাম। কাল থেকে তো সারা রাত জেগে ঘোরার পরিকল্পনা রয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement