প্রতীকী ছবি।
বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থা সংক্রান্ত মামলায় অভিযুক্ত লিজ়া মুখোপাধ্যায়-সহ ছ’জনকে আগামী ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল শিয়ালদহ আদালত। শুক্রবার দুপুর ২টো নাগাদ লিজ়া-সহ ছ’জনকে ওই আদালতে তোলা হয়। সেখানে সরকারি আইনজীবী ও অভিযুক্তদের আইনজীবীর বক্তব্য শোনার পরে বিচারক ওই নির্দেশ দেন। এ দিন যাঁদের আদালতে তোলা হয়, সেই অভিযুক্তদের মধ্যে লিজ়ার ছেলে ড্যানিয়েল রাজীব মুখোপাধ্যায় ওরফে শেখ শাহরুখউদ্দিন এবং বোন শাবানা খাতুনও ছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, এন্টালি থানার অভিযোগের ভিত্তিতে মহারাষ্ট্রের নাসিকের একটি ফ্ল্যাট থেকে গ্রেফতার হওয়া লিজ়া-সহ ওই ছ’জনকে ট্রানজ়িট রিমান্ডে কলকাতায় নিয়ে আসা হয়। তার পরে এ দিন তাঁদের শিয়ালদহের এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। লিজ়াদের তরফের আইনজীবী সৈয়দ মহম্মদ আশির বিচারককে জানান, যাঁদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছিল, তাঁদের টাকা ফেরত দেওয়ার সময়সীমা পেরিয়ে যায়নি। তা হলে এই ঘটনাকে প্রতারণা বলা হবে কোন যুক্তিতে? সেই সঙ্গেই ওই আইনজীবীর বক্তব্য, এক জনই মাত্র অভিযোগ করেছেন এবং প্রতারণার অঙ্ক ৬ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। কোনও নথিপত্রে বা স্ট্যাম্প পেপারে এই সংক্রান্ত স্বাক্ষরও নেই। যদিও সরকারি আইনজীবী জানান, তদন্ত যত এগোচ্ছে, ততই এই প্রতারণার অঙ্কের পরিমাণ বাড়ছে। এটি একটি বড়সড় জালিয়াতি-চক্র। মোট কত কোটি টাকার প্রতারণা হয়েছে, তা তদন্তের মাধ্যমেই প্রকাশ পাবে। তাঁদের বিরুদ্ধে এন্টালি, নিউ মার্কেট, কড়েয়া এবং বেনিয়াপুকুর থানায় অভিযোগ
দায়ের হয়েছে। তাই লিজ়া-সহ অভিযুক্তদের পুলিশি হেফাজতে রাখা দরকার। দু’পক্ষের বক্তব্য শুনে বিচারক ধৃতদের ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত পুলিশি হেফাজত দেন।
এর আগে তদন্তকারীরা জানান, লিজ়া যাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন বলে অভিযোগ, তাঁরা বেশির ভাগই নিম্নবিত্ত। তাঁদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে একাধিক ফ্ল্যাট, গাড়ি, স্কুল, খাবারের দোকান ও মনোহারি দোকান-সহ নিজের সাম্রাজ্য বিস্তার করেছিলেন লিজ়া। বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার কারবার চালিয়ে হাজার কোটি টাকা বাজার থেকে তুলেছিলেন। প্রতারিতদের বাড়ি গিয়ে টাকা তোলা হত। অনেকে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে নিয়ে লিজ়ার কাছে বিনিয়োগ করেছিলেন।