গান্ধী মূর্তির তলায় নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির চাকরি প্রার্থীদের অবস্থানের ১০০০ দিন হবে শনিবার। ছবি দেশকল্যাণ চৌধুরী।
গান্ধী মূর্তির পাদদেশে বসে ধর্না অবস্থান চালাচ্ছেন নবম থেকে দ্বাদশের এসএসসি চাকরিপ্রার্থীরা। সেই অবস্থানের ১০০০ দিন পূর্ণ হচ্ছে আজ, শনিবার। ওই চাকরিপ্রার্থীদের দাবি, নিয়োগের দাবিতে চলা এত দীর্ঘ ধর্না কার্যত নজিরবিহীন। তবে, এই নজির সৃষ্টি করায় তাঁরা গৌরবের কিছু দেখছেন না। বরং তাঁদের প্রশ্ন, ন্যায্য নিয়োগের জন্য আর কত দিন অপেক্ষা করতে হবে? চাকরিপ্রার্থীরা জানাচ্ছেন, শনিবার বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধি ও বেশ কিছু বিশিষ্ট মানুষ আসবেন তাঁদের সহমর্মিতা জানাতে। সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য দিনভর নানা কর্মসূচি রয়েছে তাঁদের।
অভিষেক সেন নামে এক চাকরিপ্রার্থীর অভিযোগ, ‘‘নবম থেকে দ্বাদশের জন্য সুপারনিউমেরারি পদ তৈরি করে স্কুল সার্ভিস কমিশন। কিন্তু সরকার ওই পদে যোগ্যদের সঙ্গে অযোগ্যদেরও রাখার সুপারিশ করেছিল। ফলে তা নিয়ে হাই কোর্টে মামলা হয়। এই পদ কী ভাবে তৈরি হয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায় সরকার। তার পর থেকে মামলাটি সুপ্রিম কোর্টেই রয়েছে। সরকারের এবং এসএসসি-র উদ্যোগের অভাবে মামলার শুনানি পিছিয়ে যাচ্ছে।’’ যদিও স্কুল সার্ভিস কমিশনের এক কর্তার দাবি, ‘‘ওই সুপারনিউমেরারি পদ প্রত্যাহারের কথা এসএসসি বলেছিল।’’ সেই সঙ্গে এসএসসি-র ওই কর্তা বলেন, ‘‘আমাদের উদ্যোগ নেই, এই অভিযোগ ঠিক নয়। আইন মেনেই যা হওয়ার হচ্ছে।’’
চাকরিপ্রার্থীরা জানাচ্ছেন, ২০১৯ সালের মার্চ মাসে প্রেস ক্লাবের সামনে শুরু হয়েছিল তাঁদের অবস্থান। সেখানে ২৯ দিন ধর্নায় বসেছিলেন তাঁরা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গিয়ে চাকরির প্রতিশ্রুতি দেন। ধর্না উঠে যায়। প্রতিশ্রুতি পূরণ না হওয়ায় ফের সল্টলেকে টানা ১৮৭ দিন তাঁরা ধর্নায় বসেন। তারও কিছু দিন পর থেকে তাঁরা রয়েছেন ময়দানের গান্ধী মূর্তির পাদদেশে। এ ভাবেই মোট ১০০০ দিন পূর্ণ হল ধর্নার।
চাকরিপ্রার্থীরা জানাচ্ছেন, ২০২২ সালের মে মাসেও মুখ্যমন্ত্রী নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ২০২২ সালের ২৯ জুলাই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর অফিসে তাঁদের সঙ্গে বসেছিলেন। কিন্তু নিয়োগ রয়ে গিয়েছে অধরাই। স্কুলে শিক্ষক হিসাবে যোগ দেওয়ার স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না তাঁদের।