প্রতীকী ছবি।
গলায় ফাঁসের দাগই শুধু নয়, নিউ আলিপুরের দশ বছরের মৃত বালিকার গোপনাঙ্গেও আঘাতের চিহ্ন মিলেছে। যা দেখে ময়না-তদন্তকারী চিকিৎসকের ধারণা, মেয়েটিকে যৌন নিগ্রহ করা হয়েছিল। বুধবার কাঁটাপুকুর মর্গের ওই চিকিৎসক ময়না-তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্টে এ কথাই জানিয়েছেন। আর ওই রিপোর্টের ভিত্তিতেই পুলিশ খুন ও যৌন নিগ্রহের মামলা রুজু করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ (খুন), ৩৪ (ষড়যন্ত্র), ৩৭৬এবি (১২ বছরের কমবয়সি মেয়েকে ধর্ষণ) এবং ‘প্রোটেকশন অব চিল্ড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস’ (পকসো) আইনের ছ’নম্বর ধারায় অজ্ঞাতপরিচয় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।
পুলিশ মামলা রুজু করলেও কার হাতে ওই বালিকা যৌন নিগ্রহের শিকার হয়েছে এবং কে-ই বা তাকে খুন করেছে, তা এখনও ধোঁয়াশায় ঢাকা। পুলিশের একটি সূত্রের খবর, মৃতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, তার কিছু শারীরিক অসুস্থতা ছিল। শুধু তা-ই নয়, মেয়েটির মা, দাদু, দিদিমা ও মায়ের এক পিসিমা জানিয়েছেন, তার স্নায়ুরও সমস্যা ছিল। যদিও ওই সব সমস্যার জন্য কখনওই সে ভাবে চিকিৎসা হয়নি তার। এ ক্ষেত্রেও পরিবারের সদস্যদের চূড়ান্ত গাফিলতি রয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
প্রশ্ন উঠেছে, যৌন নিগ্রহের কথা কি ওই বালিকার মা জানতেন না? না কি জেনেও তিনি অভিযুক্তকে বাঁচাতে ‘ভয় পাওয়ার’ গল্প তৈরি করেছিলেন? ওই বালিকার মা শুধু নন, তার দাদু-দিদিমাও জানিয়েছিলেন, ওই বালিকা মৃত্যুর দিন সাতেক আগে থেকে একটা আতঙ্কে ছিল। খুব ভয় পাচ্ছিল সে। আর সেই ভয়ের কারণেই খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। শৌচাগারেও যাচ্ছিল না। পরিবারের বক্তব্য ছিল, এ ভাবেই ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে পড়ে মেয়েটি। তার পরে মারা যায়। এখানেই প্রশ্ন, তা হলে কি গোটা পরিবারই মিলিত ভাবে তথ্য গোপন করতে চাইছে?
তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট হাতে এলেও কিছু প্রশ্নের উত্তর এখনও মেলেনি। তাই পরিবারের সকলকে আবার জিজ্ঞাসাবাদের পাশাপাশি দ্বিতীয় কোনও ময়না-তদন্তের চিকিৎসকের মতামত নেওয়া হতে পারে। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে এখনই কিছু বলা সম্ভব নয়।