উল্টো ছবি বাগুইআটিতে। বাস আসা মাত্রই তাতে ঠেলাঠেলি করে ওঠার চেষ্টা। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রীয় ট্রেড ইউনিয়নগুলির ডাকা বৃহস্পতিবারের সাধারণ ধর্মঘটে ব্যাহত হল বাস পরিষেবা। সকাল থেকে সরকারি বাস রাস্তায় থাকলেও বেসরকারি বাস সেই তুলনায় চোখে পড়েনি। শহরের একাধিক রাস্তায় দফায় দফায় বাম কর্মী-সমর্থকদের অবরোধের জেরে বাস চলাচল কার্যত বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। কলকাতায় বাস ভাঙচুরের কোনও ঘটনা প্রকাশ্যে না এলেও গোলমালের আশঙ্কায় বহু রুট ছিল কার্যত যাত্রী-শূন্য। ফলে বেলা যত গড়িয়েছে, ততই কমেছে বেসরকারি বাসের সংখ্যা।
ধর্মঘটে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে সরকারি স্তরে অবশ্য তৎপরতার অভাব ছিল না। মোড়ে মোড়ে পুলিশ মোতায়েন ছাড়াও ভোর থেকেই সর্বোচ্চ সংখ্যায় সরকারি বাস পথে নেমেছিল। কিন্তু ৯টা বাজার আগেই শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলিতে বাম কর্মী-সমর্থকদের অবরোধ শুরু হয়ে যায়। উত্তর এবং মধ্য কলকাতার নাগেরবাজার, রাজাবাজার, এন্টালি, মল্লিকবাজার ও লেনিন সরণিতে অবরোধ হয়। দক্ষিণে সাদার্ন অ্যাভিনিউ এবং যাদবপুরে দীর্ঘক্ষণ অবরোধের জেরে ব্যাহত হয় বাস পরিষেবা। কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে টায়ার জ্বালিয়ে চলে বিক্ষোভ। দফায় দফায় অবরোধের জেরে বহু সরকারি বাস সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারেনি। ফলে রাজ্য সরকার এবং পরিবহণ নিগম সারা দিনে ১২০০-র বেশি সরকারি বাস পথে নেমেছে বলে দাবি করলেও অনেক বাস তাদের ট্রিপ সম্পূর্ণ করতে পারেনি।
এ দিন গড়িয়া এবং বারাসতের বাসস্ট্যান্ডে যাত্রীদের বাস থেকে নামিয়ে বাসে তালা দিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। ফলে বারাসত থেকে হাওড়া, গড়িয়া, ব্যারাকপুর-সহ একাধিক রুটে প্রায় কোনও বাস চলেনি। নাগেরবাজার, দমদম, দক্ষিণেশ্বর, নিউ টাউন, সল্টলেক হয়ে যায় এমন বেশ কিছু রুটের বাস ছিল কার্যত যাত্রী-শূন্য। একই ছবি শিয়ালদহ এবং হাওড়া রুটে। শিয়ালদহ উত্তর এবং দক্ষিণ শাখায় রেল অবরোধের জেরে যাত্রী ছিল না শিয়ালদহ রুটের বাসে। পাশাপাশি, করোনা আবহে প্রথম থেকেই হাওড়া শাখায় যাত্রী কম থাকায় এ দিন হাওড়া থেকে বাবুঘাটগামী বাসও পথে নামেনি। হাতে গোনা যাত্রী ছিল ট্রাম এবং ভেসেলেও। দাবি করা সত্ত্বেও কেন পাওয়া গেল না বেসরকারি বাস? জয়েন্ট কাউন্সিল অব বাস সিন্ডিকেটসের সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ধর্মঘটের কারণে অধিকাংশ বাসকর্মী কাজে আসেননি। তাই পর্যাপ্ত বাস নামানো সম্ভব হয়নি।’’
দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম এ দিন ৯০০-র বেশি বাস চালিয়েছে বলে দাবি। কিন্তু এসপ্লানেড বা করুণাময়ী থেকে আসানসোল, দুর্গাপুর, বর্ধমান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, সিউড়ি, হলদিয়া, দিঘা-সহ সব রুটে যাত্রী সংখ্যা ছিল কম।