দক্ষিণেশ্বরের হোটেলে পুলিশ ও দুষ্কৃতীর ধস্তাধস্তিতে, জিতল পুলিশ। নিজস্ব চিত্র।
ব্যাঙ্কে প্রায় ৬২ লক্ষ ডাকাতির ঘটনায় তক্কে তক্কে ছিল উত্তর ২৪ পরগনার রহড়া থানার পুলিশ। তাই শুক্রবার দুষ্কৃতী দলের সন্ধান পেয়ে আর এক মুহূর্ত দেরি করেনি তারা। কিন্তু পুলিশের কল্পনাতে ছিল না যে, দক্ষিণেশ্বরের হোটেলে ঢোকা মাত্রই গুলি চালাতে পারে দুষ্কৃতীর দল! বছর ২৫ এর এক দুষ্কৃতীর ছোড়া গুলিতে তখন মাটিতে পড়ে গিয়েছেন সিভিক ভলান্টিয়ার। পুলিশের হাত থেকে পালাতেই হবে। তাই বাকিদের দিকেও বন্দুক তাক করে আছেন ওই দুষ্কৃতী। এমন মুহূর্তে পাল্টা গুলি চালিয়ে পুলিশ উত্তর দিতেই পারত। কিন্তু তেমনটা করলেন না রহড়া থানার সাব ইনস্পেক্টর তারক কোটাল। তিনি লড়লেন খালি হাতে। অনেকটা সিনেমার মতো দুষ্কৃতীকে বশে আনলেন তিনি।
বন্দুক উঁচিয়ে থাকা যুবকের দিকে চকিতে ছুটে গিয়ে তার হাত থেকে আগ্নেয়াস্ত্র কাড়ার চেষ্টা করেছেন এসআই তারক। ওদিকে সহকারীরা তখন দেরি করেননি। বাকি ২ দুষ্কৃতীকে তৎক্ষণাৎ বন্দি করে ফেলেছেন তাঁরা। এসআই তারক তখন লড়ে চলেছেন বন্দুক হাতে থাকা ওই দুষ্কৃতীর সঙ্গে। বেশ কিছু ক্ষণ চোর-ডাকাতের এই ধস্তাধস্তিতে জিতল পুলিশই। ব্যাঙ্ক ডাকাতিতে অভিযুক্ত ৩ দুষ্কৃতীকে পুলিশ গ্রেফতার করে দক্ষিণেশ্বরের একটি হোটেল থেকে নিয়ে গেল থানায়।
রহড়ার একটি ব্যাঙ্কে ডাকাতির পর ৩ দুষ্কৃতী ছিল দক্ষিণেশ্বরের আদ্যাপীঠ এলাকার একটি হোটেলে। শুক্রবার বিকালে সেখানে পুলিশ পৌঁছনো মাত্রই গুলি চলে। আহত হন ১ সিভিক ভলান্টিয়ার। বর্তমানে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি। তবে এসআই তারক এবং তাঁর দল শেষ পর্যন্ত তার মধ্যেই সব অভিযুক্তকে পাকড়াও করেছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, ধৃতদের নাম ধৃতদের নাম মহম্মদ সোনু (২৫), পারভেজ আখতার (৩১), আখতার আলি (২২)। তাদের সবার বাড়িই কামারহাটি এলাকায়।
যে ভাবে ওই দুষ্কৃতী দলটিকে সাব-ইন্সপেক্টর ও তাঁর দলবল ধরেছেন, তার প্রশংসা করেছেন দক্ষিণ ব্যারাকপুরের ডিসি অজয় প্রসাদ। তাঁর কথায়, ‘‘এসআই তারক কোটাল সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে যে ভাবে তিনি মাথা ঠান্ডা রেখে কোনও অস্ত্র প্রয়োগ না করে খালি হাতেই দুষ্কৃতীকে পাকড়াও করেছেন, তা প্রশংসনীয়।’’