প্রায় আড়াই মাস পরে, শুক্রবার অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে শনাক্ত করল জিডি বিড়লা স্কুলের সেই শিশুকন্যা। কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানান, ভিডিও-সম্মেলনে আলিপুর জেলে টেস্ট আইডেন্টিফিকেশন (টিআই) বা শনাক্তকরণ প্যারেডে অভিযুক্ত শিক্ষকদের চিনিয়ে দিয়েছে শিশুটি।
ঘটনাচক্রে এ দিনই দেশপ্রিয় পার্কের কারমেল প্রাইমারি স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীর উপরে যৌন অত্যাচারের অভিযোগ ওঠে স্কুলের নৃত্যশিক্ষকের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার কথা শুনে টিআই প্যারেডে যাওয়ার পথে জিডি বিড়লা স্কুলের শিশুটির বাবা প্রশ্ন তোলেন, একের পর এক স্কুলে এই ধরনের ঘটনা ঘটছে কী করে? সরকার কী করছে? পশ্চিমবঙ্গে তা হলে নিরাপত্তা কোথায়? পরে, সন্ধ্যায় তিনি বলেন, ‘‘অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে বিচারকের সামনেই আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে আমার মেয়ে। দোষীদের শাস্তি হবেই।’’ সেই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, কিছু হলেই বলা হচ্ছে, সাজানো ঘটনা। কোনটা সাজানো ঘটনা? কিছু শিক্ষক এই ধরনের বাজে কাজ করছে। যাতে বাচ্চাদের জীবনটা নষ্ট হয়ে যায়।
গত ৩০ নভেম্বর রানিকুঠির জিডি বিড়লা স্কুলে ওই শিশু ছাত্রীর উপরে যৌন অত্যাচার চালানোর অভিযোগ ওঠে। ছাত্রীর মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয় ওই স্কুলের দুই শিক্ষককে। তার কয়েক দিনের মধ্যেই এমপি বিড়লা স্কুলের এক ছাত্রীর পরিবার অভিযোগ করে, স্কুলে তাদের মেয়েকেও যৌন নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছে। দুই স্কুলের দু’টি অভিযোগই বিচারাধীন।
কারমেল স্কুলের ঘটনার জেরে এ দিনের বিক্ষোভ-রণক্ষেত্রের ছবি টিভিতে দেখে তিনি কেঁদে ফেলেছিলেন বলে জানালেন জিডি বিড়লার সেই ছাত্রীর মা। তিনি বললেন, ‘‘টিভি চলছিল। সামনেই বসে ছিল মেয়ে। ও সম্ভবত বুঝতে পেরেছে। ও জানতে চাইছিল, কী হয়েছে। কোনও রকমে সামলেছি।’’
ওই মহিলার বক্তব্য, কারমেল স্কুলের ঘটনা ফের প্রমাণ করছে, স্কুলের বিরুদ্ধে তাঁদের অভিযোগ সত্যি ছিল। কারমেল স্কুলের অভিযোগকারী বাবা-মায়ের উদ্দেশে তাঁর বার্তা, ‘‘সরকার কেন, কেউই পাশে থাকবে না। ওই শিশুর বাবা-মাকে মনে রাখতে হবে, এটা তাঁদের একার লড়াই। আমাদের পাশেও আর কেউ নেই। আমরাও একাই লড়ছি।’’
এমপি বিড়লা স্কুলে নির্যাতিতা শিশুর বাবা বলেন, ‘‘পরপর এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তবু স্কুলগুলো সচেতন হয়নি। বাবা-মায়েরা সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভরসা পাবেন কী করে, বুঝতে পারছি না।’’