কলকাতার নামী অলঙ্কার বিপণির কর্মস্থলে ‘যৌন হেনস্থা’, বিচারকের দ্বারস্থ মহিলা

সোমবার ওই অভিযোগ পাওয়ার পরে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক আলিপুর আদালতের বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটকে ওই মহিলার অভিযোগ শুনতে নির্দেশ দিয়েছেন। 

Advertisement

শুভাশিস ঘটক

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০২:৫৭
Share:

প্রতীকী ছবি।

পুলিশের কাছে নয়, সরাসরি বিচারকের কাছেই কর্মস্থলে হেনস্থার অভিযোগ দায়ের করেছিলেন এক মহিলা। তাই এ বার সরাসরি তাঁর মুখ থেকেই কর্মস্থলে হেনস্থার অভিযোগ শুনবেন আলিপুর আদালতের বিচারক। সেই অভিযোগ শোনার পরেই পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ করা হবে বলে আদালত সূত্রের খবর।

Advertisement

আলিপুর আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, নিউ মার্কেট থানা এলাকার একটি অলঙ্কার বিপণি সংস্থার প্রাক্তন মহিলা কর্মী তাঁর আইনজীবী মারফত আলিপুর আদালতের অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কাছে কর্মস্থলে যৌন হেনস্থার অভিযোগ দায়ের করেছেন। সোমবার ওই অভিযোগ পাওয়ার পরে অতিরিক্ত মুখ্য বিচারবিভাগীয় বিচারক আলিপুর আদালতের বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটকে ওই মহিলার অভিযোগ শুনতে নির্দেশ দিয়েছেন।

মহিলার অভিযোগ, গত অগস্টে তিনি ওই অলঙ্কার বিপণির নিউ মার্কেট শাখায় সেলস বিভাগে কাজে যোগ দিয়েছিলেন। সেখানেই এক ম্যানেজার নানা ভাবে তাঁর যৌন হেনস্থা করতেন। নির্যাতিতা জানিয়েছেন, ২০১১ সালে ওই অলঙ্কার বিপণির বেহালা শাখায় কাজে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। এর পরে মিন্টো পার্ক-সহ একাধিক শাখায় তিনি কাজ করেছেন। চলতি বছরে তাঁকে নিউ মার্কেট শাখায় বদলি করা হয়। সেখানেই এক ঊর্দ্ধতন আধিকারিক তাঁর যৌন হেনস্থা করা শুরু করেন বলে অভিযোগ। সহকর্মীদের সামনেই তাঁকে লক্ষ্য করে গালিগালাজ, কটূক্তিও করা হত বলে অভিযোগ। মহিলার আরও অভিযোগ, ওই অলঙ্কার বিপণি সংস্থার একাধিক কর্তাকে লিখিত ও মৌখিক ভাবে অভিযোগ জানিয়েও লাভ হয়নি। দিনের পর দিন এ ভাবে চলতে থাকায় ওই মহিলার উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা শুরু হয়। অক্টোবরে চাকরি থেকে ইস্তফা দেন তিনি।

Advertisement

আরও পড়ুন: স্মৃতি নিয়ে দাঁড়িয়ে মৃত চিঠির ঠিকানা, বেল টাওয়ার

আদালত চত্বরে ওই অভিযোগকারিণী বলেন, ‘‘প্রায় ৯ বছর ওখানে কাজ করেছি। কিন্তু একজন ম্যানেজারের ঘৃণ্য আচরণের কারণে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হলাম। মানসিক অত্যাচারে আমার উচ্চ রক্তচাপজনিত সমস্যা শুরু হয়েছে। ওই সময়ে কয়েক দিন রক্তবমিও হয়েছে। এখনও আমি সুস্থ হইনি। এক রকম ওষুধের উপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি।’’

কিন্তু পুলিশের কাছে না গিয়ে সরাসরি আলিপুর আদালতের বিচারকের কাছে অভিযোগ দায়ের করলেন কেন? ওই নির্যাতিতার আইনজীবী রাজু গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওই অলঙ্কার বিপণি সংস্থা খুবই প্রভাবশালী। তাই তদন্তে পুলিশকে কোনও ভাবে প্রভাবিত করা হতে পারে, সেই আশঙ্কা থেকেই সরাসরি বিচারকের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছি। বিচারক অভিযোগ গ্রহণ করেছেন।’’ আলিপুর আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে, অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় বিচারক বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেটকে ওই মহিলার অভিযোগ শুনতে বলেছেন। নির্যাতিতার অভিযোগ শোনার পরেই ওই অলঙ্কার বিপণির আধিকারিককে তলব করা হবে। আগামী সপ্তাহেই ওই মহিলার অভিযোগ শোনা হবে বলে আলিপুর আদালত সূত্রের খবর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement