—প্রতীকী চিত্র।
শ্বাসরোধ করে স্ত্রীকে খুন করার পরে দেহটি সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামীর বক্তব্যে রয়েছে একাধিক অসঙ্গতি। তদন্তকারীদের কাছে নিজের মোবাইল নম্বর সংক্রান্ত তথ্য না দিয়ে তাঁদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে অভিযুক্ত ভোম্বল মণ্ডল। এমনকি, খুনের সময়ে আর কেউ তার সঙ্গে ছিল কি না, তা নিয়েও তদন্তকারীদের সে বিভ্রান্ত করছে বলে অভিযোগ। খুনের সময় নিয়েও এক-এক বার এক-এক রকম দাবি করছে অভিযুক্ত। এমতাবস্থায় কী ভাবে ভোম্বল খুন করেছিল তার স্ত্রী টুম্পা মণ্ডলকে, তা জানতে অভিযুক্তকে দিয়ে মঙ্গলবার ঘটনার পুনর্নির্মাণ করাল সিআইডি।
তিন বছর আগে, ২০২০ সালে টুম্পা খুন হওয়ার সময়ে সোনারপুরের মিশনপল্লির যে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন ওই দম্পতি, এ দিন দুপুরে সিআইডি-র ‘মিসিং পার্সনস বুরো’র ওসি-র নেতৃত্বে একটি দলসেখানে হাজির হয়। তাঁদের সঙ্গে ছিল অভিযুক্ত ভোম্বল। দুপুর দেড়টাথেকে ঘণ্টাখানেক ওই বাড়িতে ছিলেন তাঁরা। যে ঘরে ওই দম্পতি থাকতেন, তা ঘুরে দেখেন তদন্তকারীরা। ঘরের মেঝের ঠিক কোন অংশেটুম্পাকে প্রথমে গলা টিপে এবং পরে বালিশ দিয়ে শ্বাসরোধ করেছিল ভোম্বল, তা তদন্তকারীদের দেখায় সে। ওই ঘর থেকে ২০ ফুট দূরে যে সেপটিক ট্যাঙ্কে টুম্পার দেহ ভরা হয়েছিল, সেখানে নিয়ে যাওয়া হয় ভোম্বলকে। তদন্তকারীরা বাড়ির মালিক ও আশপাশের বাসিন্দাদের সঙ্গেও কথা বলেন।
সিআইডি সূত্রের খবর, দিনের বেলায় স্ত্রীর দেহ সেপটিক ট্যাঙ্কে ভরেছিল বলে জেরায় দাবি করেছে অভিযুক্ত। অথচ, ওই বাড়ির আশপাশেই বেশ কিছু বাড়ি রয়েছে। সে ক্ষেত্রে দেহ টেনে নিয়ে গিয়ে ট্যাঙ্কে ফেলার সময়ে তা প্রতিবেশীদেরনজরে পড়ল না কেন, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে তদন্তকারীদের। যদিও ভোম্বলের দাবি, সে সময়ে লকডাউনের জেরে সমস্ত বাড়ির জানলা-দরজা বন্ধ থাকত। সেই সুযোগেই সকলেরনজর এড়িয়ে টুম্পার দেহ ট্যাঙ্কে ফেলেছিল সে। তবে এক তদন্তকারী জানাচ্ছেন, ভোম্বলের কথায় এখনও একাধিক অসঙ্গতি রয়েছে। সিআইডি-র জেরায় প্রথমে অভিযুক্তের দাবি ছিল, সে সকালে খুন করে দুপুরে দেহ সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলেছিল। পরে দাবি করে, রাতে খুন করে দিনে দেহ ট্যাঙ্কে ভরেছিল। আবার কখনও ভোম্বল বলেছে, ঘটনার দিন রাতে ঘরে বসে টুম্পা ও সে মদ্যপান করেছিল। পাশের ঘরে অন্য এক জন ছিল বলেও তার দাবি। তাই রহস্যের জট কাটাতেই এ দিন ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হয়।
সিআইডি সূত্রের দাবি, খুনের সময়ে সেখানে আরও কেউ ছিল কি না, তা জানতে ভোম্বলেরসেই সময়ে ব্যবহৃত মোবাইলের সিডিআর জোগাড় করার চেষ্টাচলছে। তিন বছর আগের ঘটনা হওয়ায় ফোন নম্বরের বিস্তারিত তথ্য জানতে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। সেটি মিললেই খুনেভোম্বলের সঙ্গে আরও কেউ জড়িত ছিল কি না, তা তদন্তকারীদের কাছে পরিষ্কার হবে।