কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ক্রমাগত অতিরিক্ত বিলের অভিযোগে ক্ষুব্ধ স্বাস্থ্য কমিশন। বেশ কয়েকবার সাবধান করেও মিলছে না ফল, তাই এ বার ওই হাসপাতালে অনুসন্ধানকারী দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানালেন কমিশনের চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়। কমিশনের ওই দল অভিযুক্ত হাসপাতালের এক মাসের বিল অডিট করে রিপোর্ট দেবে। মঙ্গলবার অতিরিক্ত বিল সংক্রান্ত একটি মামলার শুনানিতে এমনটাই জানালেন কমিশনের চেয়ারম্যান।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে একাধিক শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে বাইপাসের ধারে ওই বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন ৬৯ বছরের নবিজান বিবি। বিহারের বাসিন্দা নবিজান ৪২ দিন ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। হাসপাতালের বিল হয় প্রায় ২৪ লক্ষ টাকা।
স্বাস্থ্য কমিশনে হাসপাতালের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত বিলের অভিযোগ জানান ইমাম হোসেন। চিকিৎসা খরচের ২৪ লক্ষের মধ্যে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা দিয়েছে রোগীর পরিবার। এখনও বাকি রয়েছে ১৮ লক্ষ ৬৫হাজার টাকা।
মঙ্গলবার এই মামলা শুনানিতে চেয়ারম্যান বলেন,‘‘আমরা বিলটি দেখেছি। একাধিক খাতে অসম্ভব বেশি বিল করা হয়েছে। আমাদের সব নির্দেশিকা ঠিক মতো মানা হয়নি। ওষুধে ছাড় দেওয়া হলেও নির্দেশিকার সঙ্গে সামঞ্জস্য না রেখে বেশ কিছু ক্ষেত্রে অত্যন্ত বেশি দামের ওষুধ দেওয়া হয়েছে।’’
কমিশনের চেয়ারম্যানের মতে, ‘‘এর আগেও ওই বেসরকারি হাসপাতালকে চার থেকে পাঁচটি মামলায় সাবধান করেছি। শেষ একটি মামলায় জরিমানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওই হাসপাতাল ক্রমাগত একই কাজ করে যাচ্ছে। আমরা অনুসন্ধানকারী দল পাঠাব। হাসপাতালের গত এক মাসের সমস্ত বিল অডিট করবে ওই দল।’’
রোগীর পরিবার কমিশনকে জানায় তাঁরা চিকিৎসা খরচ দিয়ে দেবেন, কিন্তু সেই বিল যেন ন্যায্য হয়। চিকিৎসা বাবদ ১৬ লক্ষ টাকার বিল মেটাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানায় স্বাস্থ্য কমিশন। চার মাস পর থেকে প্রতিমাসে ২ লক্ষ টাকা করে পরিবারকে ওই টাকা হাসপাতালকে দিতে হবে।
ওই একই হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ করে ছিলেন কিডনির রোগে আক্রান্ত এক রোগীর পরিবার। অভিযোগ পেয়ে রোগীর চিকিৎসা খরচ খতিয়ে দেখে কমিশন। অভিযুক্ত হাসপাতালের দুটি শাখায় রোগীর চিকিৎসা করা হয়েছিল। কমিশন ওই হাসপাতালের রাসবিহারী শাখার বিল খতিয়ে দেখে ১৪ হাজার টাকা মতো বেশি নেওয়া হয়েছে বলে মনে করছে। তাই ১৪ হাজার টাকা রোগীর পরিবারকে ফেরতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এবং ওই হাসপাতালের আনন্দপুর শাখায় প্রায় ১৮ লক্ষ টাকা বিল হয়েছে। ওই বিলের হিসাবও খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান কমিশনের চেয়ারম্যান।