নিরাপত্তায় জোর কলকাতা স্টেশনেও

সারাদিনই চলে ৩২ জোড়া ট্রেন। তার মধ্যে আছে মৈত্রী এক্সপ্রেসের মতো আন্তর্জাতিক মানের ট্রেনও। এ ছাড়াও চলে প্রায় ১৭ জোড়া লোকাল এবং প্যাসেঞ্জার ট্রেন। কিন্তু নিরাপত্তার বহরে কলকাতা স্টেশনকে লজ্জা দেবে জেলা বা মফস্‌সলের অনেক জংশন স্টেশনও। নবান্ন সূত্রের খবর, সব দিক মাথায় রেখে বাড়ানো হচ্ছে কলকাতা স্টেশনের নিরাপত্তা।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:৫৮
Share:

সারাদিনই চলে ৩২ জোড়া ট্রেন। তার মধ্যে আছে মৈত্রী এক্সপ্রেসের মতো আন্তর্জাতিক মানের ট্রেনও। এ ছাড়াও চলে প্রায় ১৭ জোড়া লোকাল এবং প্যাসেঞ্জার ট্রেন। কিন্তু নিরাপত্তার বহরে কলকাতা স্টেশনকে লজ্জা দেবে জেলা বা মফস্‌সলের অনেক জংশন স্টেশনও।

Advertisement

নবান্ন সূত্রের খবর, সব দিক মাথায় রেখে বাড়ানো হচ্ছে কলকাতা স্টেশনের নিরাপত্তা। যার অঙ্গ হিসেবে কলকাতা স্টেশনে রেল পুলিশের (জিআরপি) নতুন থানা করার চিন্তা-ভাবনা শুরু হয়েছে। এখন এই স্টেশনে রয়েছে রেল পুলিশের একটি আউট পোস্ট। রেল পুলিশ কর্তাদের অনুমান, পুজোর পরেই ওই থানা তৈরির ছাড়পত্র চলে আসবে। নবান্ন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, নতুন থানার পুলিশকর্মীর সংখ্যা কত হবে, তা ইতিমধ্যেই ঠিক হয়ে গিয়েছে। মূল স্টেশনের পাশে নতুন থানা ভবন তৈরি হওয়ার কথা। বর্তমানে কলকাতা স্টেশনের জিআরপি কাজ করে দমদম রেল পুলিশ থানার অধীনে।

রেল পুলিশ সূত্রে খবর, এখন কলকাতা স্টেশনের রেল পুলিশের এলাকা পাতিপুকুর থেকে মাঝেরহাট পর্যন্ত। যার মধ্যে রয়েছে পাতিপুকুর ও মাঝেরহাট রেল ইয়ার্ডও। কিন্তু এই স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত রেল পুলিশের সংখ্যা হাতে গোনা। দমদম জিআরপি-র অধীনে ওই স্টেশনের দায়িত্বে আছেন মাত্র এক জন সাব-ইনস্পেক্টর। এ ছাড়া আছেন ৪ জন এএসআই এবং ১০ জন কনস্টেবল। তাঁদের সাহায্য করার জন্য সিভিক ভলান্টিয়ার রয়েছেন ১৬ জন।

Advertisement

রেল পুলিশের এক কর্তা জানান, এত বড় এলাকা হওয়া সত্ত্বেও কলকাতা স্টেশনে জিআরপি আউট পোস্টের পুলিশকর্মী বা অফিসারের সংখ্যা দমদম রেল পুলিশ থানার চেয়ে অনেক কম। দমদমে ১২ জন অফিসারের পাশাপাশি রয়েছেন ২৫ জন কনস্টেবল। অথচ ওই থানা এলাকার অধীনে রয়েছে বনগাঁ শাখার দমদম ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন এবং দমদম স্টেশন এলাকা।

কেন কলকাতা স্টেশনের জিআরপি আউট পোস্টকে থানায় রূপান্তরিত করার কথা ভাবা হচ্ছে? রেল পুলিশ সূত্রের খবর, ২০০৪ সালে তৈরি হয় স্টেশনটি। প্রথম দিকে হাতে গোনা কিছু ট্রেন এখান থেকে চললেও বর্তমানে তা অনেক বেড়েছে। সঙ্গে চালু হয়েছে মৈত্রী এক্সপ্রেসের মতো আন্তর্জাতিক ট্রেনও। যা রেলপথে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সংযোগকারী একমাত্র ট্রেন। এখন সপ্তাহে তিন জোড়া মৈত্রী এক্সপ্রেস চলে। নবান্নের একটি অংশের দাবি, চলতি বছরের শেষে তা ছয় হওয়ার কথা। এ ছাড়াও ত্রিপুরার সঙ্গে কলকাতার রেলপথে সংযোগ হওয়ার কথা রয়েছে। যা চলাচল করবে বাংলাদেশের মধ্যে দিয়ে। কূটনৈতিক স্তরে বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের আলোচনা চলছে বলেও নবান্নের ওই অংশের দাবি।

পুলিশের একাংশ জানিয়েছে, নতুন থানা তৈরির ভাবনার পিছনে দ্বিতীয় কারণ কোনও আসামিকে রাখার সমস্যা। এত দিন ওই এলাকায় কোন অপরাধী ধরা পড়লে তাকে দমদম জিআরপি-তে রাখতে হতো। এমনকী, আদালতে কোনও অভিযুক্তকে পাঠাতে হলেও সেই দমদম হয়েই পাঠাতে হতো। উদাহরণ হিসেবে রেল পুলিশের কর্তারা বলছেন, সম্প্রতি রাতে চরস-সহ এক যুবককে গ্রেফতার করেছিল কলকাতা স্টেশনের আউট পোস্টের রেল পুলিশ। কিন্তু তাকে কলকাতা স্টেশনে রাখার ব্যবস্থা না থাকায় পাঠাতে হতো দমদমে। কিন্তু সেই রাতে কোনও ট্রেন ছিল না যাতে করে ওই অভিযুক্তকে দমদমে পাঠানো যাবে। বাধ্য হয়ে আউট পোস্টের তদন্তকারীরা ট্যাক্সি ভাড়া করে ওই মাদক পাচারকারীকে দমদমে নিয়ে যান।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement