আগের দিন হাতি গলে গিয়েছিল, পরদিন মাছি গলারও উপায় নেই!
শুক্রবার এমএলএ হস্টেলের সুপারের নিগ্রহের ঘটনার পরে শনিবার থেকে হঠাৎ আঁটোসাটো হল হস্টেলের নিরাপত্তা। নজরদারি বাড়াল কলকাতা পুলিশও। অথচ শুক্রবার সন্ধ্যায় এই তৎপরতার কিছুটা দেখা গেলেও হস্টেলের সুপারকে বহিরাগতদের আক্রমণের মুখে পড়তে হত না বলে মত অনেকের।
ওই সন্ধ্যায় হস্টেলের মূল ফটকের সামনে কিড স্ট্রিটে দু’টি মোটরবাইকে ধাক্কা লাগাকে কেন্দ্র করে হস্টেলের এক ব্যক্তির সঙ্গেই বচসা শুরু হয় বহিরাগত এক যুবকের। তার জেরে ওই যুবকেরা নিরাপত্তারক্ষীদের তোয়াক্কা না করেই ভিতরে ঢুকে হস্টেলের সুপার তুষারকান্তি চক্রবর্তীকে মারধর করে। যার মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে নাম উঠে এসেছে বনগাঁ পুরসভার বিদায়ী চেয়ারম্যানের পুত্র শুভ আঢ্যর। শনিবার শুভ ও তাঁর ছয় সঙ্গীকে আদালতে তোলা হলে ১১ মে পর্যন্ত তাঁদের পুলিশি হেফাজত হয়।
শনিবার অবশ্য বদলে গিয়েছে নিরাপত্তার গোটা চিত্রটা। দুপুরে সেখানে গিয়ে দেখা গেল, ঢোকার মুখে মূল ফটকের ভিতরে তটস্থ হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন নিরাপত্তারক্ষীরা। সেখানে রয়েছে একটি ছোট ও একটি বড় দরজা। সাধারণত কোনও চার চাকার গাড়ি এলেই বড় দরজা খোলা হয়। অন্য সময়ে ছোট দরজা দিয়েই চলে যাতায়াত। অন্য দিন বড় গেট তালা দিয়ে বন্ধ করা থাকলেও ছোট গেট খোলাই থাকে। কিন্তু এ দিন দু’টি গেটই তালা ও লোহার শিকল দিয়ে বন্ধ করা রয়েছে। দরজার পাশে সর্বক্ষণ দাঁড়িয়ে রয়েছেন তিন জন নিরাপত্তারক্ষী। ভিতরে অফিসে এক জন রক্ষী বসে ফোন সামলাচ্ছেন। আর এক জন ভিতরে টহল দিচ্ছেন। এ ছাড়াও উপস্থিত কলকাতা পুলিশের তিন জন সশস্ত্র কর্মী।
শুক্রবারে সুপারকে হেনস্থা করার ঘটনায় বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় আনন্দবাজারকে জানিয়েছিলেন, দরজা দিয়ে কোনও বিধায়কের গাড়ি ঢোকার সময়ে বড় গেট খোলা হয়। তাঁর বক্তব্য, সেই ফাঁকেই কোনও ভাবে শুভ আঢ্য ও তার দলবল ঢুকে গিয়েছে।
এ দিন কোনও বড় গাড়ি আসা মাত্রই রক্ষী ছোট গেট দিয়ে বেরিয়ে আসছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে তবেই খোলা হচ্ছে বড় গেটটি। গাড়ি ভিতরে ঢুকলেই ফের বন্ধ হয়ে যাচ্ছে গেট।
তবে বিষয়টি যে এখানেই থেমে থাকবে না, তা স্পষ্ট অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা থেকেই। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘১৩ মে বিধানসভায় সর্বদলীয় বৈঠকে বিষয়টি তোলা হবে।’’ এ ছাড়াও তাঁর বক্তব্য, ‘‘কলকাতা পুলিশের আধিকারিকদের চিঠি দিয়ে ডেকে পাঠানো হবে।’’ শেযে তাঁর খেদোক্তি, ‘‘এমনটা হওয়া উচিত ছিল না।’’ বিমানবাবুর অবশ্য দাবি, ঘটনার সময়েও নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিকই ছিল।