শিয়ালদহ উড়ালপুল।
বিজয়া দশমীর রাতে শিয়ালদহ উড়ালপুলে বাসের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছিল তিন পথচারীর। গুরুতর জখম হয়েছিলেন আরও তিন জন। লালবাজার সূত্রের খবর, ওই ঘটনার তদন্তে নেমে জানা গিয়েছে, সে দিন বাসটি চালাচ্ছিল সেটির খালাসি আরমান খান ওরফে বাবলু। শুধু তা-ই নয়, বাস চালানোর কোনও লাইসেন্স ছিল না তার।
কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানিয়েছেন, পুজোয় বাসচালক ছুটিতে থাকায় খালাসির হাতে স্টিয়ারিং তুলে দেওয়া হয়েছিল। আর তাতেই ঘটে ওই মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। বেপরোয়া গতিতে যেতে গিয়ে বাসটি প্রথমে বিদ্যাপতি সেতুর রেলিংয়ে ধাক্কা মারে। এর পরে রেলিংয়ে ঘষটে ঘষটে বেশ কিছুটা গিয়ে ছ’জন পথচারীকে ধাক্কা দেয়।
পুলিশ সূত্রের খবর, ঘটনার তদন্ত করছে কলকাতা ট্র্যাফিক পুলিশের ফেটাল স্কোয়াড। ঘটনার পরেই বাসের কন্ডাক্টর নুরউদ্দিন খান এবং খালাসি আরমান খান ওরফে বাবলুকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের জেরা করে তদন্তকারীরা জেনেছেন, চালকের অবর্তমানে সে দিন বাস চালাচ্ছিল বাবলু। এক পুলিশকর্তা জানান, খালাসির হাতে গাড়ির স্টিয়ারিং তুলে দেওয়ার পিছনে আরও কেউ রয়েছে কি না, তা দেখা হচ্ছে।
গত বুধবার গভীর রাতের ওই দুর্ঘটনায় মারা যান রাহুলকুমার প্রসাদ, তাঁর শ্যালিকা অদিতি গুপ্ত এবং রাহুলের মামাতো বোন নন্দিনী প্রসাদ। তিন জনেরই বাড়ি খিদিরপুরের কার্ল মার্ক্স সরণিতে। সেই রাতে শ্যালক-শ্যালিকাদের নিয়ে ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছিলেন রাহুল। দুর্ঘটনায় জখম, ওই পরিবারেরই আরও তিন জন ফুলবাগান এলাকার একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। তাঁদের অবস্থা স্থিতিশীল।
লালবাজার সূত্রের খবর, বিদ্যাপতি সেতু দিয়ে হাঁটা নিষেধ। কিন্তু সে দিন কী ভাবে ওই ছ’জন উড়ালপুলের উপরে চলে এলেন, তা খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।কারও গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে পুলিশকর্তারা জানিয়েছেন। তবে দশমীর রাতের ওই ঘটনার পরে শিয়ালদহ উড়ালপুলে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। কেউ যাতে উড়ালপুল দিয়ে না হাঁটেন, তা দেখার জন্য পুলিশকর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে জরিমানা করা হবে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।