—প্রতীকী চিত্র।
তীব্র গরমে দীর্ঘ সময় স্কুলে থাকতে হয় পড়ুয়াদের। সেই সময়ে তারা যাতে নিয়মিত জল খায়, সে ব্যাপারে সচেতন করতে এ বার বেশ কিছু স্কুল অবলম্বন করেছে এক অভিনব পন্থা। ওই স্কুলগুলিতে বাজতে শুরু করেছে ‘ওয়াটার বেল’। শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, এই ঘণ্টা পড়ার অর্থ, তাঁদের উপস্থিতিতে জলের বোতল বার করে জল খেতে হবে পড়ুয়াদের। স্কুল চলাকালীন দু’বার এই ‘ওয়াটার বেল’ পড়ছে।
গড়িয়ার বালিয়া নফরচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানালেন, তাঁদের স্কুলে এক বার বেলা ১২টা ৫ মিনিটে এবং আবার দুপুর ৩টে ৫ মিনিটে ‘ওয়াটার বেল’ পড়ছে। প্রধান শিক্ষিকা গার্গী মুখোপাধ্যায় জানান, স্কুলে ঠান্ডা জলের মেশিন আছে। এরই সঙ্গে অভিভাবকদের বলা হয়েছে, তাঁরা যেন মেয়েদের স্কুলে পাঠানোর সময়ে ছাতা অথবা টুপি ব্যবহার করতে বলেন এবং সঙ্গে ছোট একটি ওআরএস-এর প্যাকেট দিয়ে দেন।
সরশুনা এলাকার চিলড্রেন্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন হাইস্কুল ফর গার্লস-এর প্রধান শিক্ষিকা শর্বরী সেনগুপ্ত জানাচ্ছেন, তাঁরা গত বছর থেকেই ‘ওয়াটার বেল’-এর ব্যবস্থা চালু করেছিলেন। এ বছরেও সেই ব্যবস্থা থাকছে। ইতিমধ্যে তা শুরুও হয়েছে। দ্বিতীয় এবং সপ্তম পিরিয়ডে ওই ঘণ্টা বাজবে। এ ছাড়া, স্কুলে আলাদা করে ওআরএস মজুত রাখা হচ্ছে। থাকছে কাগজের কাপ। পড়ুয়াদের ওআরএস খেতেও বলা হচ্ছে।
জল খাওয়ার ব্যাপারে পড়ুয়াদের সচেতন করতে বিভিন্ন স্কুলগুলির তরফে নেওয়া এই ব্যবস্থাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অভিভাবকেরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, অনেক সময়েই ছেলেমেয়েরা বাড়ি ফিরলে দেখা যায়, তাদের জলের বোতলে জল একই রকম রয়ে গিয়েছে বা সামান্য খরচ হয়েছে। অর্থাৎ, স্কুল চলাকালীন তারা প্রায় জলই খায়নি। স্কুলে ‘ওয়াটার বেল’ বাজলে অন্তত কিছুটা সতর্ক হয়ে জল খাবে পড়ুয়ারা। কয়েকটি স্কুলের পড়ুয়ারা জানাচ্ছে, তারা প্রার্থনার জন্য ঘণ্টা, টিফিনের ঘণ্টা, ছুটির ঘণ্টায় বরাবরই অভ্যস্ত। এ বার জল খাওয়ার জন্যও যদি ঘণ্টা পড়ে, সেটা বেশ ভালই হবে।
বাঙুরের নারায়ণ দাস বাঙুর মেমোরিয়াল মাল্টিপারপাজ় স্কুলের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় বড়ুয়া জানান, তাঁরা প্রত্যেক পড়ুয়াকে বার বার বলেন, এই তীব্র গরমে তারা যেন মাঝেমধ্যেই জল খায়। কিন্তু স্কুল ছুটির সময়ে অনেক ক্ষেত্রেই পড়ুয়াদের জলের বোতল পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, অনেকেই বোতল থেকে জল খায়নি। সঞ্জয় বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে পরিস্রুত জলের মেশিন আছে। রয়েছে ঠান্ডা জলের মেশিনও। কিন্তু তা সত্ত্বেও জল খাওয়ার প্রবণতা পড়ুয়াদের মধ্যে বেশ কম। তাই আমরা সোমবার থেকে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পিরিয়ডের মাঝখানে দু’মিনিটের জন্য ওয়াটার বেল বাজানোর ব্যবস্থা করেছি। শিক্ষকেরা সেই সময়ে উপস্থিত থাকছেন। তাঁদের সামনেই যতটা সম্ভব জল খাবে পড়ুয়ারা। সেই সঙ্গে পুরো স্কুল চলাকালীন পড়ুয়ারা যাতে অন্তত দেড় থেকে দু’লিটার জল খায়, সে দিকেও আমরা সবাই নজর রাখব।’’