বেলা ১২টা নাগাদ প্ল্যাকার্ড নিয়ে পড়ুয়ারা কলেজ চত্বরে বিক্ষোভ দেখান। সঙ্গে চলতে থাকে স্লোগান। ফাইল ছবি
রাস্তার জল-কাদা থেকে বাঁচতে কলেজে কেপ্রি পরে এসেছিলেন তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রী। অভিযোগ, দমদমের সরোজিনী নায়ডু কলেজ ফর উইমেনের ওই ছাত্রী সোমবার ক্লাসে ঢুকতে না ঢুকতেই কেন তিনি ওই পোশাক পরে এসেছেন, সেই প্রশ্ন তোলেন কলেজেরই এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষাকর্মী। আরও অভিযোগ, ওই ছাত্রীকে রীতিমতো ‘বডি শেমিং’ও করেন তিনি।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার পোস্টার এবং প্ল্যাকার্ড হাতে প্রতিবাদে নামেন কলেজের সিংহভাগ পড়ুয়া। তাঁদের অভিযোগ, শুধু তৃতীয় বর্ষের ওই ছাত্রীর সঙ্গেই নয়, আগেও পোশাক নিয়ে অন্য ছাত্রীদের কটাক্ষ করেছেন ওই শিক্ষাকর্মী। এ দিন অভিযোগকারী ওই ছাত্রী বলেন, ‘‘আমাকে দেখে উনি বলেন, এই পোশাক পরে পড়াশোনা হয় না, কলেজে আসা যায় না। এটা আমার চেহারায় মানাচ্ছে না।’’
ছাত্রীদের অভিযোগ, অবসর নেওয়ার পরেও ওই শিক্ষাকর্মী কলেজে আসছেন শুধুমাত্র পড়ুয়ারা কী পরে আসছেন, সে দিকে নজর রাখতে। তাঁদের আরও বক্তব্য, জিন্স-টপ, এমনকি কুর্তি এবং লেগিংস পরতেও বারণ করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে, চুড়িদার পরে আসতে হবে, সঙ্গে থাকতে হবে ওড়না। পোশাক হতে হবে হাঁটু ঢাকা। সোমবারের ঘটনার পরে ওই ছাত্রীরা সম্মানহানিরও অভিযোগ এনেছেন। গোটা ঘটনাটি তাঁরা লিখিত ভাবে জানিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষা এবং অভ্যন্তরীণ অভিযোগ কমিটিকে (আইসিসি)।
এ দিন বেলা ১২টা নাগাদ প্ল্যাকার্ড নিয়ে পড়ুয়ারা কলেজ চত্বরে বিক্ষোভ দেখান। সঙ্গে চলতে থাকে স্লোগান। অবিলম্বে ওই শিক্ষাকর্মীকে বরখাস্ত করার দাবি জানান তাঁরা। এ নিয়ে জানতে অধ্যক্ষা ঊর্মিলা উকিলকে ফোন করা হলে তিনি প্রথমে ফোন ধরে কলকাতা হাই কোর্টে আছেন বলে ফোন কেটে দেন। পরে আর ধরেননি। দুপুরে অধ্যক্ষা কলেজে এলে তাঁর গাড়ি ঘিরে ধরেন পড়ুয়ারা। পরে ছাত্রীরা জানান, অধ্যক্ষার সঙ্গে তাঁদের গোটা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সমাধানসূত্র বার করার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি, পড়ুয়ারা অভিযোগ নথিবদ্ধ করেছেন কলেজের পরিচালন সমিতির কাছেও। সেখানে সমাধান না হলে তাঁরা শিক্ষা দফতরে জানাবেন। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, ‘‘আমি ঘটনার কথা জানি না। তবে এমন কিছু ঘটে থাকলে আমি ওই কলেজের অধ্যক্ষার সঙ্গে কথা বলব।’’