বিকল্প: গঙ্গা দূষণ রোধে গত দুর্গাপুজোয় ডাঙায় প্রতিমা গলিয়ে অন্য পথে হেঁটেছিল শহরের একটি পুজো। ফাইল চিত্র।
করোনা-আবহে গঙ্গার পরিবর্তে বিকল্প পদ্ধতিতে কী ভাবে বিসর্জন দেওয়া যায়, তা দেখা গিয়েছিল গত বছরের দুর্গাপুজোতেই। যেখানে জলের মাধ্যমে ডাঙাতেই প্রতিমা গলানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এ বার সরস্বতী পুজোতেও সেই একই পথে হাঁটতে চলেছেন অনেকে।
যেমন, কলকাতা পুরসভার আট নম্বর বরো এমনই একটি ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগী হয়েছে। ভবানীপুরের নর্দার্ন পার্ক ও লেডিস পার্কে পরিবেশবান্ধব বিসর্জনের আয়োজন করা হবে আজ, বুধবার ও আগামী কাল, বৃহস্পতিবার। আট নম্বর বরো সূত্রের খবর, যে সব সরস্বতী প্রতিমার উচ্চতা পাঁচ-ছ’ফুট, সেই সমস্ত প্রতিমাই পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে বিসর্জন দেওয়া হবে। অর্থাৎ, ছোট পুজোর জন্য প্রাথমিক ভাবে এই ব্যবস্থা করা হবে।
কী ভাবে হবে ওই বিসর্জন?
বরোকর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, ছোট ট্রাকের মধ্যবর্তী অংশ প্লাস্টিক দিয়ে মোড়া থাকবে। তার মধ্যে জল থাকবে। সেখানেই প্রতিমা বিসর্জিত হবে। আট নম্বর বরোর কোঅর্ডিনেটর সন্দীপরঞ্জন বক্সী বলেন, ‘‘পরে কাঠামোগুলো তুলে নিয়ে ধাপায় গিয়ে ফেলার পরিকল্পনা রয়েছে।’’ পরিবেশকর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে বিসর্জন নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই আলোচনা হচ্ছে। তবে এখনও তার বাস্তবায়ন হয়নি। কিন্তু করোনা পরিস্থিতি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে যে, ডাঙাতেও বিসর্জন সম্ভব। এবং তাতে কোনও অসুবিধা নেই। এক পরিবেশবিদের কথায়, ‘‘ব্যতিক্রম পদ্ধতি হিসেবে না ধরে বিসর্জনের এই পদ্ধতিকেই সার্বিক স্তরে গ্রহণ করা হোক। তা না হলে গঙ্গার দূষণ ঠেকানো যাবে না।’’
আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উল্লেখ করছেন তাঁরা। এক পরিবেশবিদ জানাচ্ছেন, যেহেতু অল্পবয়সিরা মূলত সরস্বতী পুজোর উদ্যোক্তা, তাই তাঁদের মধ্যে পরিবেশবান্ধব বিসর্জনের এই অভ্যাস যদি গড়ে তোলা যায়, তা হলে আখেরে লাভ হবে পরিবেশেরই। তাঁর কথায়, ‘‘ছোটবেলা থেকে এই অভ্যাস তৈরি করা গেলে দীর্ঘস্থায়ী ভিত্তিতে এক সময়ে এটাই অভ্যাসে পরিণত হবে।’’