ফাইল চিত্র।
পুরুষ যাত্রীদের ঠেকাতে ট্রেনের মহিলা কামরার উপরে এ বার থেকে নজরদারি চালাবে আরপিএফ। এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পূর্ব রেলের কর্তারা।
কড়া বিধিনিষেধের আবহেই চালু হয়েছিল স্টাফ স্পেশ্যাল লোকাল ট্রেন। কিন্তু অভিযোগ, পূর্ব রেলের উত্তর ও দক্ষিণ শহরতলির বিভিন্ন ট্রেনে পুরুষ যাত্রীরা অবাধেই উঠে পড়ছেন মহিলা কামরায়। এ নিয়ে জিআরপি ও আরপিএফের কাছে ভূরি ভূরি অভিযোগ জমা পড়েছে। পুরুষ যাত্রীরা ওঠায় মহিলারা অনেক সময়ে নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন। ট্রেনের কামরায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সামলানোর দায়িত্ব জিআরপি-র। কিন্তু কর্মীর অভাবে প্রতিটি লোকাল ট্রেনের উপরে নজরদারি চালানো তাদের পক্ষে কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। অথচ, গত কয়েক মাসে মহিলা নিত্যযাত্রীদের তরফে অসংখ্য অভিযোগ জমা পড়েছে রেলের দফতরে। পুরুষ যাত্রীদের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগও তুলেছেন কেউ কেউ। রেলের কর্তারা জানিয়েছেন, একা জিআরপি-র পক্ষে নজরদারি চালানো সম্ভব নয় বলেই আরপিএফ কর্মীরাও সেই কাজে নামবেন।
আরপিএফ সাধারণত রেলের সম্পত্তি দেখাশোনার দায়িত্বে নিয়োজিত। আর রেলের আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সমস্যা সামলানোর দায়িত্বে রয়েছে জিআরপি। আরপিএফের এক কর্তা বলেন, ‘‘ট্রেনের মহিলা কামরায় নজরদারি চালাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আরপিএফ জওয়ানদের। জিআরপি-র সঙ্গে স্থানীয় স্তরে আলোচনা করে কোন কোন ট্রেনের মহিলা কামরায় নজরদারি চালানো হবে, তা ঠিক করতে বলা হয়েছে।’’ পাশাপাশি, দায়িত্বপ্রাপ্ত আরপিএফ কর্মীদের কর্তব্যে কোনও রকম গাফিলতি কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না বলেও ওই নির্দেশিকায় জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। গত ১০ অগস্ট আরপিএফের সিনিয়র ডিভিশনাল সিকিওরিটি কমিশনার এই মর্মে একটি নির্দেশিকা জারি করেছেন।
অভিযোগ, মূলত সকালের দিকে বিভিন্ন স্টেশন থেকে স্টাফ স্পেশ্যাল ট্রেনের মহিলা কামরায় জোর করে উঠে পড়ছেন পুরুষ যাত্রীরা। মহিলা যাত্রীদের অভিযোগ, তাঁদের আসনও দখল করে নিচ্ছেন তাঁরা। প্রতিবাদ করলে উল্টে শাসানি দেওয়া হচ্ছে। জিআরপি-র একটি সূত্রের দাবি, গত কয়েক মাসে উত্তর ও দক্ষিণ শহরতলির বিভিন্ন স্টেশনের জিআরপি থানায় কয়েকশো অভিযোগ দায়ের হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই পদক্ষেপ করতে যাওয়ায় পুরুষ যাত্রীরা একজোট হয়ে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করেছেন।
তাই প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, প্রতিটি স্টেশনেই আরপিএফ জওয়ানেরা মহিলা কামরার উপরে নজর রাখবেন, যাতে পুরুষ যাত্রীরা তাতে উঠতে না পারেন। কোনও পুরুষ মহিলা কামরায় ওঠার চেষ্টা করলে তাঁকে বাধা দেওয়া হবে। প্রয়োজনে আটক করে জিআরপি-র হাতেও তুলে দেওয়া হতে পারে। আবার ট্রেনের কামরার ভিতরে অথবা প্ল্যাটফর্মে আইনশৃঙ্খলাজনিত বা অপরাধমূলক কোনও ঘটনা ঘটলে তার তদন্ত করবে জিআরপি। আপাতত পূর্ব রেলের উত্তর ও দক্ষিণ শাখায় এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে বিভিন্ন জেলার স্টেশনেও আরপিএফ-কে এই কাজে লাগানো হতে পারে।