বিক্ষোভ: এক শিশুকন্যাকে যৌন নিগ্রহ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে অবরোধ। বুধবার সকালে, বারাসত-টাকি রোডে ছবি: সুদীপ ঘোষ
এক নাবালিকাকে যৌন নিগ্রহ এবং খুনের বিচার চাইতে বুধবার সকালে চার ঘণ্টা বারাসত-টাকি রোড অবরোধ করে রাখলেন স্থানীয়েরা। ওই অবরোধে শামিল হয়েছিলেন ওই নাবালিকার পরিবারও। এর জেরে দীর্ঘক্ষণ ওই রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুন করার পরেও অভিযুক্তদের গ্রেফতার করছে না পুলিশ। যদিও দত্তপুকুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, নাবালিকা-খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই রাহুল মণ্ডল এবং শেখ রাহুল নামে দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার তদন্তও চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, কদম্বগাছি এলাকার বাসিন্দা, বছর চারেকের ওই নাবালিকা গত ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিল। ১৯ সেপ্টেম্বর কদম্বগাছি পুলিশ ফাঁড়ির কাছ থেকে মেয়েটির দেহ উদ্ধার হয়। তাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায় মেয়েটির পরিবার। এ দিন ওই নাবালিকার বাবা বলেন, ‘‘ঘটনার পরে এত দিন কেটে গেলেও খুনের বিচার হচ্ছে না। আসল দোষীকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।’’ অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে মঙ্গলবার রাতে এলাকায় একটি প্রতিবাদ সভা করেন স্থানীয়েরা। তাঁদের অভিযোগ, সভা চলাকালীন বারাসত ১ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও স্থানীয় তৃণমূল নেতা আরশাদ উদ জামানের অনুগামীরা তাঁদের উপর চড়াও হয়ে মারধর করে। এর পরেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে জনতা। পাশের একটি চায়ের দোকানে ভাঙচুর চালানো হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বুধবার সকালে ফের উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এলাকা। এ দিন সকাল ৯টা থেকে রাস্তায় গাছের গুঁড়ি ফেলে দিয়ে অবরোধ শুরু হয়। অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতে ত্রিপল টাঙিয়ে, মাইক নিয়ে অবরোধ করতে শুরু করেন স্থানীয়েরা। তাঁরা আরশাদকে গ্রেফতার দাবি তোলেন। এর পরে ঘটনাস্থলে বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছে অভিযুক্তকে শাস্তির আশ্বাস দিলে দুপুর ১টা নাগাদ অবরোধ উঠে যায়।
এর পরে এলাকার মানুষ গিয়ে চড়াও হয় আরশাদের বাড়িতে। তাঁর বাড়ি ভাঙচুরের চেষ্টাও করা হয়। তবে সেখানে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রসঙ্গত, কিছু দিন আগেও কদম্বগাছি ফাঁড়ি ঘেরাও করেছিল এলাকার মানুষ। তাদের অভিযোগ, ওই নাবালিকাকে খুনের পিছনেও আরশাদের হাত রয়েছে। সে কারণেই আসল দোষীদের আড়াল করার চেষ্টা করছে পুলিশ। তবে এ দিন আরশাদ বলেন, ‘‘এ সব ভিত্তিহীন অভিযোগ। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে, দোষীরা সাজা পাবে।’’