এ ভাবেই দুমড়ে গিয়েছে দুর্ঘটনাগ্রস্ত গাড়ি। বৃহস্পতিবার, নিউ টাউনে। —নিজস্ব চিত্র।
চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে পরপর পাঁচটি দুর্ঘটনা। সল্টলেক থেকে নিউ টাউনের মধ্যে। বৃহস্পতিবার সকালে নিউ টাউনের চকপাচুরিয়া এবং আকাঙ্ক্ষার কাছে দু’টি পৃথক দুর্ঘটনায় তিন জন আহত হয়েছেন। বুধবারও নিউ টাউনে দু’টি এবং সল্টলেকে একটি দুর্ঘটনা ঘটেছিল।
গত কয়েক সপ্তাহে এমনই বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে ওই এলাকায়। কেউ মারা না গেলেও জখম হয়েছেন কয়েক জন।
প্রশ্ন উঠেছে, চেষ্টা করেও কেন দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না?
বিধাননগর ট্র্যাফিক পুলিশের বক্তব্য, চালকদের একাংশ নিয়ম মানতে চাইছেন না। এ দিন সকালের ঘটনাই তার প্রমাণ। নিউ টাউনের চকপাচুরিয়ায় একটি গাড়ি ডিভাইডারে ধাক্কা মেরে উল্টে যায়। চালক-সহ মোট তিন জন আহত হন। তাঁদের স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এলাকার বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, তীব্র বেগে গাড়ি চালাতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়েই এই দুর্ঘটনা। গাড়ি যে ভাবে চলছিল, তাতে চালক নেশাগ্রস্ত ছিলেন বলেই সন্দেহ তাঁদের।
এ দিন সকালেই আবার নিউ টাউনের আকাঙ্ক্ষা মোড়ের কাছে ১৬ নম্বর ট্যাঙ্ক সংলগ্ন একটি রাস্তায় দু’টি গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটে। তার পরেই একটি ক্যাব এসে একটি গাড়ির পিছনে ধাক্কা মারে। যদিও ওই ঘটনায় জখম কারও আঘাতই গুরুতর নয়। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই রাস্তাটি একমুখী। কোনও একটি গাড়ি না জেনে ওই রাস্তায় উল্টো দিক থেকে ঢুকে পড়েছিল।
বুধবার সকালে নিউ টাউনে পরপর দু’টি এবং সল্টলেকে একটি দুর্ঘটনা ঘটেছিল। প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে, হয় চালক নিয়ম মানেননি, নয়তো পথচারীর সচেতনতার অভাব ছিল।
অন্য সমস্যাও রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের মতে, বিধাননগর কমিশনারেটের অধীনে ভিআইপি রোড, বিশ্ব বাংলা সরণি-সহ গুরুত্বপূর্ণ কিছু রাস্তা রয়েছে। সেখানে তীব্র গতিতে গাড়ি চলে। রাস্তায় পুলিশের নজরদারি থাকাকালীন চালক কিংবা পথচারীরা যতটা সতর্কতা অবলম্বন করেন, পুলিশ না থাকলে সেটুকু চোখে পড়ে না।
ফলে কখনও ভোরে, কখনও বা বেশি রাতে দুর্ঘটনা ঘটেই চলেছে। সেই সঙ্গে দিন-রাতের ব্যস্ত সময়েও অবশ্য দুর্ঘটনা ঘটছে।
গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য বিধাননগর পুলিশ স্পিড ব্রেকার, হাম্প, সিসি ক্যামেরার নজরদারির ব্যবস্থা করেছে। পাশাপাশি, একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশকর্মীদের মোতায়েন করা হয়েছে। নিয়ম ভাঙলেই দেওয়া হচ্ছে কেস। পাশাপাশি, বছরভর ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’-এর মাধ্যমে চালক ও পথচারীদের সচেতন করার কাজও চলছে। এমনকী, সল্টলেকের মধ্যে সিগন্যাল ব্যবস্থাও ঢেলে সাজা হয়েছে। তার ফলে দুর্ঘটনার সংখ্যা এবং মৃত্যুর ঘটনা অনেকটাই কমে গিয়েছিল। কিন্তু গত এক মাসে ফের দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়েছে।
বিধাননগর পুলিশের এক কর্তা জানান, নিয়ম ভাঙলে জরিমানা থেকে শুরু করে গ্রেফতারির মতো পদক্ষেপও করা হচ্ছে। গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরিকাঠামোগত আরও কয়েকটি পদক্ষেপ করা হবে। কিন্তু কেন আবার দুর্ঘটনা ঘটছে, তা খতিয়ে দেখা হবে।