ফাইল ছবি
জনস্বার্থ মামলার নামে তোলাবাজির অভিযোগে ধৃত রাঁচীর আইনজীবী টাকা নেওয়ার জন্য ব্যবহার করতেন তাঁরই কর্মীদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। লালবাজারের দাবি, বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য থেকে এমন আট জন কর্মীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের সন্ধান মিলেছে। এর পাশাপাশি, ধৃত রাজীব কুমারের রাঁচীর বিভিন্ন বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে তদন্তকারীরা ২৪টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের হদিস পেয়েছেন। যার মধ্যে রাজীবের নিজস্ব অ্যাকাউন্ট ছাড়াও রয়েছে তাঁর স্ত্রী, পুত্র ও আত্মীয়দের অ্যাকাউন্ট। সেগুলির লেনদেন সম্পর্কে জানতে ব্যাঙ্কের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন তদন্তকারীরা।
গত ৩১ জুলাই রাতে দক্ষিণ কলকাতার একটি শপিং মল থেকে গ্রেফতার হন রাজীব। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, রাঁচী হাই কোর্টে এক ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা করার পরে টাকার বিনিময়ে মামলা তুলে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়ে ওই ব্যবসায়ীকে চাপ দিচ্ছিলেন তিনি। এর জন্য ৫০ লক্ষ টাকা দাবি করেন তিনি। নগদে সেই টাকা নিতে গিয়েই হাতেনাতে ধরা পড়েন রাজীব। বুধবার তাঁকে বিচার ভবনের বিশেষ আদালতে তোলা হয়েছিল। মুখ্য সরকারি কৌঁসুলি দীপঙ্কর কুণ্ডু আদালতে জানান, রাজীবের বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে প্রচুর সম্পত্তির সন্ধান মিলেছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য তাঁকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়া প্রয়োজন। বিচারক সব শুনে ধৃতকে ২৪ অগস্ট পর্যন্ত জেল হেফাজত দেন। তাঁর আরও নির্দেশ, জেল হেফাজতে থাকাকালীন রাজীবকে প্রয়োজন মতো জেরা করতে পারবেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ জানিয়েছে, নয়ডায় ওই আইনজীবীর আরও দু’টি সম্পত্তির খোঁজ মিলেছে। এ নিয়ে রাজীবের দিল্লিতে একটি অফিস, নয়ডায় দু’টি ফ্ল্যাট এবং একটি অফিসের সন্ধান পেলেন তদন্তকারীরা। তাঁদের অনুমান, ওই চারটি সম্পত্তিরই মোট মূল্য অন্তত ৫০ কোটি টাকা। এর আগে রাঁচীতে রাজীবের ১৬টি ফ্ল্যাট এবং একটি তেতলা বাড়ির খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল। একই সঙ্গে খোঁজ মিলেছিল রাঁচী থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে সাত একর জমির।
লালবাজার সূত্রের খবর, কলকাতার সাত জন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে রাজীব জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে। অন্যদের মাধ্যমে এই মামলাগুলি দায়ের করতেন তিনি। পরে সেই মামলায় আইনজীবী হিসেবে অবতীর্ণ হতেন। এক পুলিশকর্তা জানান, রাজীবের ভাইয়ের ল্যাপটপ-সহ বেশ কিছু নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এই চক্রে তাঁরও বড় ভূমিকা আছে বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে। পাশাপাশি, খোঁজা হচ্ছে কয়েক জন মধ্যস্থতাকারীকেও। পুলিশের ধারণা, তাঁদের জেরা করা গেলেই গোটা চক্রের কার্যকলাপ সামনে আসবে।