KMC

KMC: অবসরের বছর ঘুরতে চললেও প্রাপ্য অর্থ পাননি ১৩০০ পুরকর্মী

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ারের পদ থেকে অবসর নিয়েছেন মেটিয়াবুরুজের বাসিন্দা এক ব্যক্তি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ জুন ২০২২ ০৬:১০
Share:

ফাইল চিত্র।

অবসর নেওয়ার পরে এক বছর কাটতে চললেও এখনও গ্র্যাচুইটি এবং কমিউটেশন বাবদ প্রাপ্য মোটা টাকা পাননি বহু পুরকর্মী। প্রতি সপ্তাহে পুর ভবনের পেনশন বিভাগে এসে হত্যে দিচ্ছেন তাঁরা।কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে এখনও পর্যন্ত অবসর নিয়েছেন ১৪৮০ জন কর্মী। তাঁদের মধ্যে গ্র্যাচুইটি ও কমিউটেশন বাবদ টাকা হাতে পেয়েছেন মাত্র ১৮০ জন। বাকি ১৩০০ জনকে এই টাকা দিতে হলে পুরসভার প্রয়োজন ১৫৮ কোটি টাকা। সেই টাকা কবেপাবেন ওই পুরকর্মীরা, সে ব্যাপারে সদুত্তর মেলেনি পুর আধিকারিকদের কাছেও।

Advertisement

চলতি বছরের জানুয়ারিতে ডেপুটি চিফ ইঞ্জিনিয়ারের পদ থেকে অবসর নিয়েছেন মেটিয়াবুরুজের বাসিন্দা এক ব্যক্তি। গ্র্যাচুইটি ও কমিউটেশন বাবদ পুরসভার থেকে তাঁরপাওনা ২৭ লক্ষ টাকা। ওই ব্যক্তির কথায়, ‘‘এত বছর চাকরি করার পরে সমস্ত টাকা পেয়ে যাব, সেটাই আশা করেছিলাম। কিন্তু ছ’মাস হতে চলল, গ্র্যাচুইটি ও কমিউটেশনের টাকা মিলল না। প্রায়ই পুরসভায় খোঁজ নিতে আসছি। কিন্তু কেউই স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারছেন না।’’ কর্মীদের একাংশ জানাচ্ছেন, সপ্তাহে তিন দিনপুরসভার সদর দফতরের পেনশন সেলে লম্বা লাইন পড়ছে। পেনশনের বকেয়া টাকা কবে মিলবে, উদ্বিগ্ন মুখে খোঁজ নিতে আসছেন কর্মীরা। মাস সাতেক আগে অবসর নেওয়া এক জনের কথায়, ‘‘সংসারে আমিই একমাত্র রোজগেরে। ছেলে কিছু করে না। পেনশন পেলেও সেই টাকায় কষ্ট করে সংসার চালাতে হচ্ছে। আমার নিজের শরীরও ভাল নয়। গ্র্যাচুইটি ও কমিউটেশনের টাকা পাওয়াটা খুব জরুরি।’’

অবসরপ্রাপ্তদের মধ্যে অনেকেরই ক্যানসার, কিডনির অসুখ থেকে শুরু করে নানাবিধ শারীরিক সমস্যা রয়েছে। পুরসভার পেনশন বিভাগ সূত্রের খবর, অসুস্থ শরীরেও অবসরপ্রাপ্ত ওই কর্মীরা পুর ভবনে দরবার করছেন। এক পুর আধিকারিকের কথায়, ‘‘ওঁদের অসহায় মুখগুলো দেখে কষ্ট হয়। আমাদের কাছে যেটুকু তথ্য থাকে, তা-ই বুঝিয়ে বলি।’’ পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্র্যাচুইটি ও কমিউটেশন বাবদ অবসরপ্রাপ্ত পুরকর্মীরা ১০ লক্ষ টাকা থেকে শুরু করে ৩০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত পাবেন।

Advertisement

মাসখানেক আগে মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন, পেনশনের টাকা সবাই পাচ্ছেন। কিন্তু কমিউটেশন ও গ্র্যাচুইটি বাবদ প্রাপ্য টাকাআপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। পুরসভার স্পেশ্যাল কমিশনার তাপস চৌধুরী বলেন, ‘‘এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না।’’ এমন পরিস্থিতির নেপথ্যে পুর কোষাগারের সঙ্গিন দশাও দায়ী কি না, সেই প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে কর্মীদের মধ্যে। ‘কেএমসি জেনারেল সার্ভিস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি আদর্শ সিংহ বলেন, ‘‘অবসরপ্রাপ্তদের বকেয়া টাকা যাতে দ্রুত মেটানো হয়, সেই দাবি জানিয়ে ২৪ জুন স্পেশ্যাল কমিশনারের দ্বারস্থ হব।’’

বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষের অভিযোগ, ‘‘মেয়র পারিষদদের দামি ল্যাপটপ দেওয়া হচ্ছে। অথচ, যাঁরা সারা জীবন পুরসভার সেবা করে এলেন, তাঁদেরই হকের টাকা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। পুর প্রশাসনের মানবিকতা, দায়বদ্ধতা বলতে কিছু নেই। অবসরপ্রাপ্তদের টাকা অবিলম্বে না মেটালে আমরা এর পরে পুরসভা ঘেরাও করব।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement