গাছ কাটা রুখতে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ

সত্তরের দশকে কালিন্দীতে একাধিক দুষ্প্রাপ্য গাছ লাগিয়েছিলেন বটানিক্যাল গার্ডেনের তৎকালীন প্রধান এবং ওই আবাসনের বাসিন্দা গোপীনাথ পাণিগ্রাহী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৯ ০২:১৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

ফ্ল্যাটের সামনে তরতাজা কৃষ্ণচূড়া গাছটা যে হঠাৎই শুকিয়ে যাচ্ছে, দেড় বছর আগে চোখে পড়েছিল মৌমিতা নন্দীর। এক দিন মুড়িয়ে কাটা হয় সেটি। একই পরিণতি আরও একটি কৃষ্ণচূড়ার। অভিযোগ, দু’বছরে যশোর রোড সংলগ্ন কালিন্দী এলাকায় এ ভাবেই কাটা পড়েছে ৩০টির বেশি গাছ। তাই গাছ বাঁচাতে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ করে লড়াইয়ে নেমেছেন কালিন্দী হাউজিং এস্টেটের অধিবাসীদের একাংশ।

Advertisement

সত্তরের দশকে কালিন্দীতে একাধিক দুষ্প্রাপ্য গাছ লাগিয়েছিলেন বটানিক্যাল গার্ডেনের তৎকালীন প্রধান এবং ওই আবাসনের বাসিন্দা গোপীনাথ পাণিগ্রাহী। অভিযোগ, কিছু আবাসিকের আপত্তি ছিল গাছ নিয়ে। ঘরে আলো-হাওয়া কম, পাখির ডাকে ঘুমে ব্যাঘাত— এমন সব অজুহাতে কোপ পড়ছিল গাছে। এমনকি, কয়েকটি গাছে বিষ দেওয়া হয়েছিল বলেও সন্দেহ রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা নন্দিনী রায়-মৃগাঙ্ক শীলেরা জানাচ্ছেন, দু-এক মাস আগে তৈরি হয় হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ— ‘গাছ লাগান প্রাণ বাঁচান’। নন্দিনীর কথায়, ‘‘ওই গ্রুপে প্রায় একশো সদস্য। আবাসনের তিনটি ব্লকের কোথাও গাছ কাটা হলে আশেপাশের বাসিন্দারা গ্রুপেই খবর দিয়ে দেন। তাতে গাছ কাটা আটকানো সহজ হচ্ছে।’’

গাছ বাঁচাতে স্থানীয় প্রশাসন ও বন দফতরে পিটিশন দিয়েছে ওই গ্রুপের সদস্যেরা। সচেতনতা প্রচারেও কাজ করছে গ্রুপ। যাঁরা গাছ কাটার পক্ষে ছিলেন, তাঁদের অনেকেই এখন গাছ লাগাতে উৎসাহ দিচ্ছেন। খুদেদের দিয়ে চারা রোপণ করিয়েছেন। পাশে পেয়েছেন হাউজিং অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় কাউন্সিলরকে। দক্ষিণ দমদমের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য বলছেন, ‘‘নির্বিচারে গাছ কাটা সমর্থন করি না। আন্দোলনকারীদের পাশে আছি। গাছ কাটা আর ছাঁটার মধ্যে তফাৎ বুঝতে হবে। চারা বাঁচাতে ৫০টি দরমার বেড়া করে দিয়েছি।’’

Advertisement

গাছ বাঁচানোর যুদ্ধে কিছুটা জয়লাভ করলেও কাজ যে আরও বাকি, তা জানেন গ্রুপের সদস্যেরা। তবে এ টুকুতেই আটকে থাকতে চান না তাঁরা। নন্দিনীর কথায়, ‘‘গাছের সঙ্গে এ বার প্লাস্টিক আর জল অপচয় রুখতেও প্রচার চালাবে এই গ্রুপ।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement