সাহায্য: পানীয় জলের জন্য বাসিন্দারা বিক্ষোভ দেখানোর পরে এলাকায় এসেছে পুরসভার জলের গাড়ি। শনিবার, জোড়াবাগানে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
পানীয় জলের দাবিতে শনিবার সকালে পথ অবরোধ করলেন জোড়াবাগান এলাকার বাসিন্দারা। টানা দু’ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করেন তাঁরা। স্থানীয় কাউন্সিলর এবং পুরসভার কর্মীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলেও অবরোধ তুলতে রাজি হননি বাসিন্দারা। পরে স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা ঘটনাস্থলে গিয়ে বাসিন্দাদের আশ্বাস দিলে তবে অবরোধ ওঠে।
বিডন স্ট্রিট, কোম্পানি বাগান ও নিমতলা স্ট্রিট এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, তাঁরা তিন দিন ধরে গঙ্গার পরিস্রুত পানীয় জল পাচ্ছেন না। এ দিকে, ছটপুজো চলে এসেছে। তাই জলের দাবিতে সকাল ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত বিডন স্ট্রিট, রবীন্দ্র সরণি ও নিমতলা স্ট্রিটের সংযোগস্থল অবরোধ করেন এলাকাবাসী। এর ফলে তীব্র যানজট তৈরি হয়। বাস-অটো দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকায় চূড়ান্ত হয়রানির শিকার হতে হয় যাত্রীদের। অনেকেই বাস থেকে নেমে হাঁটতে শুরু করেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পানীয় জলের সমস্যার কথা এলাকার পুর প্রতিনিধি-সহ পুর আধিকারিকদের বার বার জানিয়েও কাজ হয়নি। তাই এ দিন তাঁরা অবরোধে শামিল হন।
পুরসভার জল সরবরাহ দফতরের এক আধিকারিকের দাবি, ‘‘জোড়াবাগান এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জল জোড়াবাগান জল শোধনাগার থেকে সরবরাহ করা হয়। মল্লিকঘাট পাম্পিং স্টেশনের মাধ্যমে গঙ্গার জল তুলে তা জোড়াবাগান শোধনাগারে পাঠানো হয়। কিন্তু বিসর্জনের পরে প্রতিমার সামগ্রী মল্লিকঘাট পাম্পিং স্টেশন ও জোড়াবাগান জল শোধনাগারের পাম্পে জড়িয়ে যাওয়ায় যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। ফলে গঙ্গা থেকে জল তোলাই যাচ্ছিল না। পুরসভার তরফে কাজ শুরু হয়েছে।’’
স্থানীয় বাসিন্দাদের অবশ্য অভিযোগ, এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা দীর্ঘদিনের। ২১ এবং ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, পানীয় জল সরবরাহের নির্দিষ্ট সময় এখানে মানা হয় না। যদিও কাউন্সিলরেরা এই অভিযোগ উড়িয়ে জানাচ্ছেন, এলাকায় পানীয় জলের কোনও সমস্যাই নেই। ২১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মীরা হাজরার দাবি, ‘‘পানীয় জলের বড় কোনও সমস্যা নেই। এক শ্রেণির মানুষের প্ররোচনায় বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।’’ আবার ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইলোরা সাহা বলেন, ‘‘বিসর্জনের জন্য মল্লিকঘাট পাম্পিং স্টেশন ও জোড়াবাগান জল শোধনাগারে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় পানীয় জলের সমস্যা হয়েছে। তবে তিন দিন নয়। শুক্রবার থেকে পানীয় জলের এই সমস্যা শুরু চলছে।’’
অবরোধকারীদের সঙ্গে দুই কাউন্সিলরের কথাতেও এ দিন সমাধানসূত্র বেরোয়নি। তখন স্থানীয় বিধায়ক শশী পাঁজা গিয়ে মাইক হাতে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁর আশ্বাসেই অবরোধ ওঠে। মন্ত্রী জানান, বিসর্জনের পরে প্রতিমার কাঠামো, বিচালি-সহ বিভিন্ন জিনিস মল্লিকঘাট পাম্পিং স্টেশনে জমে যাওয়ায় সমস্যা হচ্ছে। এটা যান্ত্রিক ত্রুটি। ২১ এবং ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরেরা এলাকায় জলের গাড়ি পাঠিয়েছেন। পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা কাজ করছেন। সরবরাহ দ্রুত স্বাভাবিক হবে।