মশা তাড়াতে মশারি-মিছিল হাতিয়াড়ায়

হাতিয়াড়ায় সন্ধ্যা হলে ঝাঁকে ঝাঁকে ধেয়ে আসছে মশা। রাস্তার মোড় থেকে ঘরের ভিতর, কোথাও মশকবাহিনীর হাত থেকে রক্ষে নেই। মশা মারার ধূপ জ্বালিয়েও নিস্তার মেলে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৮ ০৬:৩০
Share:

মশা নিধনের দাবিতে এ ভাবেই পথে। রবিবার। নিজস্ব চিত্র

মশার কামড় থেকে বাঁচানোর আর্জি জানিয়ে পথে নামলেন হাতিয়াড়ার বাসিন্দারা। রবিবার সকালে মশারি, প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন-সহযোগে মিছিলের স্লোগান ছিল, ‘পাহাড় দেখতে দার্জিলিং, সমুদ্র দেখতে দীঘা, বাঘ দেখতে সুন্দরবন, মশা দেখতে হাতিয়াড়া’!

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, হাতিয়াড়ায় সন্ধ্যা হলে ঝাঁকে ঝাঁকে ধেয়ে আসছে মশা। রাস্তার মোড় থেকে ঘরের ভিতর, কোথাও মশকবাহিনীর হাত থেকে রক্ষে নেই। মশা মারার ধূপ জ্বালিয়েও নিস্তার মেলে না। যার প্রেক্ষিতে এ দিন মশামুক্ত হাতিয়াড়া গড়ার স্লোগান দিয়ে পথে নামেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সকাল ১০টা নাগাদ বিধাননগর পুরনিগমের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত হাতিয়াড়া গোট এলাকা থেকে মিছিল শুরু হয়। সেখান থেকে হাতিয়াড়া বাসস্ট্যান্ড হয়ে ওয়ার্ডের অলিগলি ঘোরে মিছিল। পদযাত্রার সামনের ফ্লেক্সে কটাক্ষের সুরে মশা দেখতে হাতিয়াড়া আসার আমন্ত্রণ পেয়ে বাসিন্দাদের কেউ কেউ সম্মতিসূচক ঘাড় নাড়লেন। কেউ আবার মশা মারতে মিছিলের আয়োজন দেখে হেসে ফেলেন। মিছিলের সমর্থনে সই সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। মশার দৌরাত্ম্যে কমাতে সই করতে হবে জেনে মহিলা, যুবক, কিশোর, তরুণী সকলেই এগিয়ে আসেন।

হাতিয়াড়া বাসস্ট্যান্ডে মুদিখানার দোকান রয়েছে পীযূষ মণ্ডলের। সইকারীদের মধ্যে তিনিও রয়েছেন। রবিবার দুপুরে পীযূষ বলেন, ‘‘গত বছর আমার মেজ ভাই এবং তাঁর ছেলের ডেঙ্গি হয়েছিল। রাতে মশা যেন টেনে নিয়ে যায়! নিজের চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না।’’ রবীন্দ্রনগর-নজরুলনগরের বাসিন্দা মিনু সামন্ত বলেন, ‘‘মশার যে কী দাপট! শীতকালে বড় বড় মশা চোখ-মুখে ঢুকে যায়।’’ মহম্মদ শাজাহান নামে আর এক স্থানীয়ের আক্ষেপ, আত্মীয়েরা বাড়িতে এলে মশার দৌরাত্ম্যে নাজেহাল হয়ে পড়েন। যাওয়ার সময়ে তাঁদের মুখে শুধু
মশা-কাহিনি।

Advertisement

মশার বাড়বাড়ন্তের জন্য এলাকার নিকাশি ব্যবস্থাকে দায়ী করেছেন বাসিন্দারা। তবে বাসিন্দাদের একাংশ যে ভাবে যত্রতত্র প্লাস্টিকের ব্যাগ, থার্মোকলের থালা, বাটি ফেলছেন, তাতেও নর্দমার মুখ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এ দিনের মিছিলের অন্যতম উদ্যোক্তা ‘হাতিয়াড়া সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন’-এর কর্ণধার কাজি মহম্মদ সফিক বলেন, ‘‘মশা আমাদের এলাকার বড় সমস্যা। সকলে মিলে এগিয়ে এসে সমস্যার সমাধান করতে হবে। সেই লক্ষ্যেই এ দিনের মিছিল।’’

স্থানীয় সিপিএম কাউন্সিলর মহসিন আহমেদ বলেন, ‘‘গরমের সময়ে সব ওয়ার্ডে মশা বাড়ে। হাতিয়াড়া ব্যতিক্রম নয়। মশা আছে অস্বীকার করছি না। সে জন্যই তো ছ’জনের বিশেষ দল গড়ে মশা নিধনের কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে। এক দিনে তো অবস্থা বদলাবে না। তবে আমরা কাজ করছি।’’ এলাকার নর্দমার বেহাল নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে মহসিনের বক্তব্য, নর্দমা নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়। মানুষকেও সচেতন হতে হবে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement