প্রতীকী ছবি
কাল, শনিবার ইদুজ্জোহা। করোনা অতিমারির বর্তমান পরিস্থিতিতে বকরি ইদ উপলক্ষে নমাজের জন্য শহর এবং রাজ্যের মসজিদগুলিতে একাধিক বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। একই সঙ্গে মাস দুয়েক আগে ইদের মতো বাড়িতে থেকেই ইদুজ্জোহা পালন করার আবেদন জানিয়েছেন রাজ্যের মুসলিম ধর্মগুরুরা।
করোনার কথা মাথায় রেখে চলতি বছরে রেড রোডে ইদুজ্জোহার নমাজও বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কলকাতা খিলাফত কমিটির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মহম্মদ সইদ। নাখোদা মসজিদে নমাজ পালিত হলেও দু’টি জমাত (একটি সকাল সাড়ে ছ’টায়, অন্যটি সাড়ে সাতটায়) হবে। ওই মসজিদের ইমাম শফিক কাশেমি বলেন, ‘‘কোভিড পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের বিধি মেনে মসজিদে নমাজ হবে। সকলকে অনুরোধ, মসজিদে ভিড় করবেন না। শিশু এবং বয়স্করা বাড়িতে থেকেই নমাজ আদায় করুন।’’ মসজিদে যাতে দূরত্ব-বিধি মেনে সকলে নমাজ পড়েন, সেই আর্জিও জানিয়েছেন কাশেমি সাহেব। তিনি আরও বলেন, ‘‘অবশ্যই মাস্ক পরে মসজিদে আসবেন। সঙ্গে হ্যান্ড স্যানিটাইজ়ার রাখতে ভুলবেন না।’’
ধর্মতলার টিপু সুলতান মসজিদের তরফে হাফিজ হারুন রশিদ বলেন, ‘‘ইদুজ্জোহার নমাজে একসঙ্গে ২৫ জনের বেশি ঢুকতে দেওয়া হবে না। নমাজ পড়ার সময়ে মাস্ক পরতেই হবে।’’ তিনি জানান, দু’মাস আগের ইদের তুলনায় এখন করোনার প্রকোপ অনেক বেড়েছে। তাই তাঁরও আবেদন, প্রবীণ এবং শিশুরা যতটা সম্ভব বাড়িতে থেকে নমাজ আদায় করুন।
মসজিদগুলিতে যাতে ভিড় এড়িয়ে নমাজ পড়া হয়, তার জন্য রাজ্যের প্রায় ৬০ হাজার মসজিদে নোটিস পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডের চেয়ারম্যান, কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি আব্দুল গনি। তিনি বলেন, ‘‘করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমাদের আরও বেশি সতর্ক হতে হবে। তাই ইদুজ্জোহায় বাড়িতে থেকে নমাজ পড়তে রাজ্যের ৬০ হাজার মসজিদে নোটিস পাঠানো হয়েছে। সংশ্লিষ্ট জেলাশাসক এবং ব্লক অফিসের মাধ্যমে তা প্রতিটি মসজিদে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। কোনও মাঠে বা ইদগায় ভিড় করে নমাজ পড়া যাবে না।’’
আরও পড়ুন: খোঁজ রাখে না কেউ, অভিযোগ ‘প্রণামের’ সদস্যদের
রাজ্যের মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি ফুরফুরা দরবার শরিফের তরফে ত্বহা সিদ্দিকীর আবেদন, ‘‘হাতজোড় করে বলছি, যেমন ভাবে বাড়িতে থেকে ইদ পালন করেছিলেন, একই ভাবে ইদুজ্জোহা পালন করুন।’’ রেড রোডে ইদের নমাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইমাম ফজলুর রহমান বলেন, ‘‘আমরা নিজেরা সচেতন হলেই এই অতিমারিকে হারাতে পারি। তাই সকলকে বলতে চাই, যাঁরা অসুস্থ এবং প্রবীণ, তাঁরা বাড়িতে থেকে নমাজ আদায় করুন। মসজিদে ভিড় করবেন না। আর মসজিদে এলেও অবশ্যই মাস্ক পরবেন। দূরত্ব-বিধি বজায় রাখবেন।’’
চিকিৎসক অমিতাভ নন্দী বলেন, ‘‘এখন প্রতিদিনই সংক্রমণ বাড়ছে। এ ক্ষেত্রে কোনও এক দিন কোথাও বেশি জমায়েত হলে তা আরও বেড়ে যাওয়ার সমূহ আশঙ্কা। তাই যে কোনও ভাবে ভিড় ঠেকাতেই হবে।’’
আরও পড়ুন: জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে গ্রুপ