বাসন্তী হাইওয়ে। ফাইল চিত্র।
শুধু একটা রাস্তাতেই গত কয়েক বছরে দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা অন্তত ৩০। আহত প্রায় শতাধিক। বড় কোনও দুর্ঘটনার পরে রাজ্য পুলিশ ও পূর্ত দফতরের কর্তারা নিয়মমাফিক একাধিক বৈঠক করেছেন। রাস্তায় বসেছে আলো। যান নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন পদক্ষেপ করেছে রাজ্য ও কলকাতা পুলিশ। তার পরেও সেই রাস্তায় দুর্ঘটনার সংখ্যা কমেনি।
রাস্তার নাম বাসন্তী হাইওয়ে। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, পুলিশি নজরদারির অভাবে আলো চুরি হয়ে গিয়েছে। পাশাপাশি দীর্ঘ দিন ধরে তাঁরা ডিভাইডারের দাবি জানিয়ে আসছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত সেটি হয়ে ওঠেনি। এ বিষয়ে পূর্ত দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ডিভাইডারের বিষয়টি পরিকল্পনার স্তরে রয়েছে। শীঘ্রই তা রূপায়ণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
শনিবার গভীর রাতে ওই রাস্তার আড়ুপোতায় লরি ও অটোর মুখোমুখি সংঘর্ষে মারা যান অটোচালক ও দুই মাছ ব্যবসায়ী। মৃত এক মাছ ব্যবসায়ী সন্দীপ দাসের স্ত্রী দেবিকা দাসের অভিযোগ, ‘‘প্রতিবেশীর থেকে ফোন পেয়ে আড়ুপোতা মোড়ের কাছে পৌঁছে দেখি, একাধিক জায়গা অন্ধকার। আলো জ্বললে হয়তো এমন দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।’’ যদিও পুলিশের তরফে বাতিস্তম্ভে আলো জ্বলছিল বলেই দাবি করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, বাসন্তী হাইওয়ে তৈরি হওয়ার পর থেকেই দুর্ঘটনার সংখ্যা বেড়ে চলেছে। ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে গাড়ির সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কায় গুরুতর আহত হন ২৫ জন অফিস-যাত্রী। ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কায় মারা যান একটি গাড়ির চালক-সহ পাঁচ জন। আবার গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে বাসের সঙ্গে অ্যাপ-ক্যাবের ধাক্কায় মৃত্যু হয়েছিল ক্যাবের চালক-সহ দু’জনের। এর সঙ্গে বাসন্তী হাইওয়ের পাশে খালে গাড়ি পড়ে একাধিক বার ঘটেছে দুর্ঘটনা।
বাসিন্দারা আরও অভিযোগ করছেন, ‘‘একে আলো জ্বলে না। তার উপরে ডিভাই়ডার না থাকাতেই বার বার দুই গাড়ির মুখোমুখি ধাক্কা লাগছে।’’ যদিও পূর্ত দফতরের এক কর্তা অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘বাসন্তী হাইওয়েতে নিয়মিত আলো জ্বলে। তবে ডিভাইডার নির্মাণ নিয়ে চিন্তা-ভাবনা চলছে।’’
পুলিশেরই একটি অংশের অভিযোগ, সরকারি ও বেসরকারি বাস সহ ওই রাস্তায় বেপরোয়া ভাবে চলে মোটরচালিত ভ্যানও। এক পুলিশকর্তা জানান, ওই রাস্তায় নজরদারি রাখা হয়। কিন্তু বানতলার কাছে একটি বিপজ্জনক বাঁকেই ঘটছে অধিকাংশ দুর্ঘটনা। ওই কর্তার আরও দাবি, বাসন্তী হাইওয়ের বিভিন্ন জায়গায় গাড়ির গতিবেগ বেঁধে দেওয়া রয়েছে। সে দিকেও নজর রাখা হয়। শনিবার রাতে দুর্ঘটনার পরে আহতদের হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশই। সে কারণে তাদের দাবি, গভীর রাতেও বাসন্তী হাইওয়েতে নজরদারি থাকে।