পথচিত্র: বারাসতে দিনের বেলায় চলছে রাস্তা সারাইয়ের কাজ। যার জেরে প্রায়ই থমকে যাচ্ছে যান চলাচল। ছবি: সুদীপ ঘোষ
সকাল থেকে জাতীয় সড়কের একাংশ গার্ডরেল দিয়ে আটকে চলছে রাস্তা সংস্কারের কাজ। কিন্তু তার জেরে থমকে যাচ্ছে যানবাহন, যানজটে নাকাল হচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দা এবং নিত্যযাত্রীরা। মধ্যমগ্রাম ছাড়িয়ে বারাসতের দিকে যেতে রথতলা এলাকার ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক এবং ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়ক, যশোর রোডের সংস্কার কেন দিনের বেলায় করা হবে, এখন সেই প্রশ্ন তুলছেন স্থানীয়েরা।
রথতলা এলাকায় ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কের একাংশের অবস্থা বড়ই খারাপ ছিল। পিচ উঠে গিয়ে বিশাল গর্তে জল জমে ভয়ঙ্কর অবস্থা হয়েছিল। তাই অবশেষে সেই রাস্তা সংস্কার শুরু হওয়ায় স্থানীয়েরা খুশি। কিন্তু সেই সঙ্গে সেই কাজের জন্য যানজটেও ভুগতে হচ্ছে তাঁদের।
রাস্তা সংস্কারের এই কাজ কেন রাতে হচ্ছে না? বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মানুষের অসুবিধার কথা জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কিছু সমস্যা রয়েছে।’’ জাতীয় সড়কের বারাসত বিভাগের এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, এত দিন লকডাউনের জন্য এই কাজ আটকে ছিল। এ ছাড়া রাতে কাজ করার ক্ষেত্রে দু’টি অসুবিধা রয়েছে। প্রথমত, রাতে ওই পথ দিয়ে বড় বড় ট্রাক যাতায়াত করে বলে রাস্তা আটকে সংস্কারের কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না। দ্বিতীয়ত, গত কয়েক দিন ধরে রাতে বৃষ্টি হওয়ায় পিচ গলিয়ে মেরামতির কাজ করা যাচ্ছে না।
মধ্যমগ্রামের পর থেকে বারাসত শহর ছাড়িয়ে ময়না পর্যন্ত ওই রাস্তাটি সম্প্রসারণের কাজ থমকে রয়েছে। রাস্তা সংস্কারের কাজও হয় না। তবে স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, প্রতি বছরই বর্ষার আগে ওই বেহাল রাস্তায় জোড়াতাপ্পি দেওয়া হয়। কিন্তু কয়েক মাস গড়াতে না গড়াতেই রাস্তার অবস্থা আবার যে কে সেই হয়ে দাঁড়ায়। সংস্কারের অভাবে এ বারেও বর্ষার আগে থেকেই ভাঙতে শুরু করেছিল জাতীয় সড়ক। ফলে প্রশ্ন উঠছে, বর্ষার আগেই কেন ওই রাস্তা সারানো হল না।
বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে রাজ্যের কন্টেনমেন্ট জ়োনে ফের কড়া লকডাউন চালু হলেও অন্যত্র খোলা থাকছে দোকানপাট-অফিসকাছারি। ফলে বাইরে বেরিয়ে ওই রাস্তা দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে গিয়ে বহু মানুষকেই নাকাল হতে হচ্ছে। এমনকি, যানজটে আটকে পড়ছে অ্যাম্বুল্যান্সও। ভিকি মণ্ডল নামে এক যুবকের কথায়, ‘‘ট্রেন চলছে না বলে এই রাস্তার উপরে চাপ বেড়েছে। অনেকেই বাইক, স্কুটার বা গাড়িতে কলকাতায় যাচ্ছেন। আমিও বাইক নিয়ে অফিসে যাই। কিন্তু তিন দিন ধরে অফিসে ঠিক সময়ে পৌঁছতে পারিনি।’’
বারাসতের ডাকবাংলো থেকে ওই রাস্তাটি এক দিকে চলে গিয়েছে কৃষ্ণনগরের দিকে। সেই পথে কলোনি মোড়, হেলাবটতলা পেরিয়ে ময়না পর্যন্ত ওই জাতীয় সড়কের হাল আরও খারাপ। গোটা রাস্তাটিই ভেঙেচুরে গিয়েছে। বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, এতে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে।
ডাকবাংলো থেকে রাস্তাটির আর একটি ভাগ যশোর রোড-বনগাঁ হয়ে বাংলাদেশ চলে গিয়েছে। সেখানেও যশোর রোডের একাংশ আটকে দত্তপুকুরের জয়পুলে চলছে রাস্তা সারানোর কাজ। সুদীপ্ত ভদ্র নামে এক অ্যাম্বুল্যান্স চালক বলছেন, ‘‘রাস্তায় এত যানজট হচ্ছে যে, রোগীকে নিয়ে হাসপাতাল পৌঁছতে দেরি হয়ে যাচ্ছে।’’ দত্তপুকুর থেকে হাবড়া পর্যন্ত ওই রাস্তাতেও বড় বড় গর্তে পড়ে প্রতিদিনই ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে।