সাঁতরাগাছি সেতু। ফাইল চিত্র
সাঁতরাগাছি সেতুর মেরামতিতে ছাড়পত্র দিল রাজ্য সরকার। সম্প্রতি মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ওই সেতুর পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করেন। সূত্রের খবর, পূর্ত দফতর, পুলিশ এবং স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে সেই বৈঠকে স্থির হয়েছে, আগামী ১৯ নভেম্বর থেকে সেতু মেরামতির কাজ শুরু হবে। ডিসেম্বর মাস শেষ হওয়ার আগেই ওই কাজ সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে।
পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, অতীতে একাধিক বার সাঁতরাগাছি সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয়েছিল। তাতে রিপোর্ট সন্তোষজনক ছিল না। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে দ্রুত এই সেতু মেরামতির কাজ শুরু করতেই হচ্ছে প্রশাসনকে। স্থির হয়েছে, ওই সেতুর ‘এক্সপ্যানশন জয়েন্ট’ বদলানো হবে। বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যায়, সেটিই সেতুর স্থায়িত্ব ধরে রাখতে অনেকাংশে সাহায্য করে। কারণ গাড়ি চলাচলের ভার, কম্পন, তাপমাত্রার তারতম্য নিয়ন্ত্রণ করে সেতুর ভারসাম্য বজায় রাখে ওই ‘এক্সপ্যানশন জয়েন্ট’। ২০১৬ সালে কোনা এক্সপ্রেসওয়ের দিকের ওই সেতুর অংশের ২১টি ‘এক্সপ্যানশন জয়েন্ট’ বদলানোর কাজ হয়েছিল। কিন্তু এ বার সেতুটির একটি করে লেন বন্ধ রেখে ২০টি করে মোট ৪০টি ‘এক্সপ্যানশন জয়েন্ট’ বদলানো হবে। গোটা কাজে খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ৯০ লক্ষ টাকা। পূর্ত দফতরের এক কর্তার কথায়, “শীঘ্রই এ ব্যাপারে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার কথা সরকারের।”
প্রসঙ্গত, মাঝেরহাট সেতুর একাংশ ভেঙে পড়ার পরে রাজ্যের সব ক’টি সেতুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে শুরু করে রাজ্য সরকার। সেই পর্বে বেশ কিছু সেতুর কাঠামো মেরামত করা হয়েছিল। নবান্ন সূত্রে জানা যাচ্ছে, সে সময়ে সাঁতরাগাছি সেতুর নীচের অংশে দুই-তিন দফায় সংস্কারের কাজ হয়েছিল।
প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, দ্বিতীয় হুগলি সেতু থেকে কোনা এক্সপ্রেসওয়ে পর্যন্ত ঝুলন্ত সড়কপথের পরিকল্পনা চূড়ান্ত হওয়ার পথে। এ নিয়ে সমীক্ষার কাজও এগিয়ে গিয়েছে অনেকটা। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ সেই কাজটি করবে। তবে ওই প্রকল্প এলাকার মধ্যে সাঁতরাগাছি স্টেশনের কাছেই রয়েছে এই সেতু। তাই বড় প্রকল্পের কাজ শুরু করার আগে এই সেতুর সার্বিক সংস্কার বিশেষ জরুরি।
তা ছাড়া সাঁতরাগাছি সেতু দিয়ে দৈনিক প্রায় ৭০ হাজার গাড়ি চলাচল করে। পণ্যবাহী গাড়ি চলে দৈনিক ১২-১৫ হাজার। প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, সংস্কারের কাজ চলাকালীন বড় বা পণ্যবাহী গাড়ি ওই সেতু ব্যবহার করতে পারবে না। তার বদলে বিকল্প পথে এবং সময়ে সেগুলি ঘুরিয়ে দেওয়া হবে। সেতু দিয়ে অন্যান্য গাড়ি চলাচলেও বেশ কিছু নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে। সে জন্য অবশ্য কিছুটা যানজটের আশঙ্কাও থাকছে।