প্রতীকী ছবি
রাজ্য জুড়ে সাপ্তাহিক লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে বান্ধবী ও এক বন্ধুকে নিয়ে গাড়ি করে বেরিয়েছিলেন এক যুবক। বেপরোয়া গতির গাড়িটিকে আটকাতে যান এক পুলিশকর্মী ও এক সিভিক ভলান্টিয়ার। গতি বাড়িয়ে পালানোর চেষ্টা করলে গাড়িটির ধাক্কায় জখম হন ওই দু’জন। গ্রেফতার হয়েছেন গাড়িচালক রৌনক আগরওয়াল। শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে তিলজলা থানার ই এম বাইপাসের উত্তর পঞ্চান্নগ্রাম এলাকায়।
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ পরমা আইল্যান্ডের কাছে কর্তব্যরত তিলজলা ট্র্যাফিক গার্ডের কর্মীরা দেখেন, একটি গাড়ি বেপরোয়া গতিতে মেট্রোপলিটনের দিক থেকে বাইপাস ধরে রুবির দিকে যাচ্ছে। তাঁরা ওয়্যারলেসে গাড়ির নম্বর জানিয়ে সেটি আটকানোর বার্তা দেন। তখন উত্তর পঞ্চান্নগ্রামের কাছে রাস্তা আটকে নাকা তল্লাশি চলছিল। দূর থেকেই ব্যারিকেড ও প্রচুর পুলিশ দেখে বেপরোয়া গতিতে ছোটা গাড়িটির চালক আচমকা পিছনের দিকে পালানোর চেষ্টা করেন।
ঘটনাস্থলে থাকা ট্র্যাফিক কনস্টেবল তন্ময় দাস জানান, ওয়্যারলেসে গাড়ির রং আর নম্বর জানতে পেরে সতর্ক ছিলেন তাঁরা। পুলিশ দেখে গাড়িটি পিছন দিকে কয়েকশো মিটার চলেও গিয়েছিল। কিন্তু সে দিকেও পুলিশের একটি গাড়ি থাকায় বেশি দূর যেতে পারেনি। পুলিশকর্মীরা গাড়িটি ঘিরে ফেলে চালককে নামতে বলেন। তখন আবার দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন রৌনক নামের ওই যুবক। গার্ড রেলে গাড়িটি ধাক্কা মারলে জখম হন তন্ময়। তাঁর পায়ে আঘাত লাগে। গাড়ি ও গার্ড রেলের মাঝে আটকে গিয়ে আহত হন কাছেই থাকা সিভিক ভলান্টিয়ার বাবাই মল্লিক। তন্ময় জানিয়েছেন, আশপাশ থেকে লোকজন ছুটে না এলে গাড়িটি তাঁদের ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যেত।
পুলিশ সূত্রের খবর, রৌনকের বাড়ি শরৎ বসু রোডে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, রাতে কোথাও পার্টি করে সকালে বাড়ি ফিরছিলেন ওই তিন জন। রৌনক ও তাঁর সঙ্গীরা নেশাগ্রস্ত ছিলেন বলেও পুলিশের একটি অংশের মত। এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে তিন জনেরই ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে। রৌনক পুলিশকে জানিয়েছেন, বন্ধুদের নিয়ে তিনি শহর ঘুরতে বেড়িয়েছিলেন।
রৌনকের বিরুদ্ধে জামিন অযোগ্য ধারায় মামলা করা হয়েছে বলে এক পুলিশ কর্তা জানিয়েছেন। এ দিনই ধৃত চালককে আদালতে তোলা হয়। সরকারি আইনজীবী শুভেন্দু ঘোষ জানান, বিচারক ধৃতের দু’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
এ দিকে আহত কনস্টেবলের স্ত্রীর অভিযোগ, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তিনি স্বামীর খোঁজ নিতে তিলজলা থানায় গিয়েছিলেন। কিন্তু খোঁজ দেওয়া দূর, উল্টে তাঁর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে। এক পুলিশ আধিকারিক জানান, আহত কনস্টেবল ট্র্যাফিক গার্ডের কর্মী। সেই কারণেই থানার কর্মীরা নাম শুনে চিনতে পারেননি প্রথমে। করোনা সতর্কতায় সকলকে থানায় ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না। ওই মহিলার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়নি।
অন্য দিকে, এ দিন সকাল পৌনে আটটা নাগাদ বেলেঘাটা ট্র্যাফিক গার্ডের এক সার্জেন্ট ই এম বাইপাস ও মেট্রোপলিটান সিটির মোড়ে নাকা তল্লাশির সময়ে একটি মোটরবাইককে আটকান। লকডাউনে কেন বেরিয়েছেন, তা জানার জন্য ওই সার্জেন্ট মোটরবাইক চালককে থামাতে গেলে সেটি তাঁকে ধাক্কা মেরে বেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ। ঘটনায় সার্জেন্টের হাতে চোট লাগে। আহত সার্জেন্টের নাম সন্দীপ ঘোষ। চালক-সহ বাইকটি আটক করা হয়েছে।