প্রতীকী ছবি।
একেই বলে অসাধ্যসাধন! ১১ দিনের যমজ শিশুর এক জনের শরীরে জন্মের পর থেকেই থাবা বসিয়েছে বিরল রোগ। একই দেহে জোড়া পাকস্থলী। এও সম্ভব! এমনটাই দেখা গিয়েছে কলকাতার এক সদ্যোজাতের দেহে। রোগ ধরা পড়তেই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা। শেষমেশ ঘণ্টা দেড়েকের অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। বর্তমানে সুস্থ রয়েছে শিশুটি।
ঠিক কী ঘটেছে?
জানা গিয়েছে, গত ১০ জুন একবালপুরের এক হাসপাতালে আইভিএফ পদ্ধতিতে যমজ পুত্রসন্তানের জন্ম দেন কলকাতার এক বাসিন্দা। যমজ সন্তানের মধ্যে এক জনের পেট অস্বাভাবিক ভাবে ফুলে যায়। কিছু খাওয়ালে বমি করতে থাকে বাচ্চাটি। এর পরই চিকিৎসকরা শিশুটির নানা পরীক্ষা করেন। এক্স-রে, আপার জি-আই কনট্রাস্ট (খাদ্যনালী থেকে কী ভাবে পাকস্থলী পর্যন্ত খাবার যাচ্ছে, তার পরীক্ষা), সিটি স্ক্যান করা হয়। পরীক্ষার পর ১৩ জুন চিকিৎসকরা জানতে পারেন যে, শিশুটি গ্যাস্ট্রিক ডুপ্লিকেশন রোগে ভুগছে। অর্থাৎ শিশুটির শরীরে দুটো পাকস্থলী রয়েছে। চিকিৎসকদের মতে, এটি বিরল রোগ।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, শিশুটির শরীরে যে দ্বিতীয় পাকস্থলী পাওয়া গিয়েছে, সেটি সিস্ট হিসেবে ছিল। পাকস্থলীর ভিতরের দেওয়াল না থাকায় যা খাবার যাচ্ছে, তা স্বাভাবিক ভাবে দ্বিতীয় পাকস্থলীতে চলে যায়। ফলে খাবার জমতে থাকে। মূল পাকস্থলী যেমন হয়, তার থেকে তিন গুণ ফুলে যায়। হাওয়াও ঢুকে যায়।
গত ১৪ জুন শিশুটির অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচার করে সিস্টটি কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পাকস্থলীর ক্ষতিগ্রস্ত দেওয়াল ঠিক করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, বাচ্চাটির ওজন কম এবং সে অপরিণত। চিকিৎসক বিশ্বজিৎ ভাদুড়ীর নেতৃত্বে অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করা হয়। চিকিৎসক দলে ছিলেন অ্যানাস্থেটিস্ট ডা. সুবীর বসু ঠাকুর ও সার্জেন সারহদ পুরকায়েত। বর্তমানে ডা. সৌগত আচার্যের অধীনে চিকিৎসাধীন রয়েছে শিশুটি।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।