ঘনঘটা: তিতলির আগমনে মেঘলা শহরের আকাশ। বৃহস্পতিবার। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক
গত পাঁচ বছরের মধ্যে পুজোর এক দিনও বৃষ্টি হয়নি শুধু ২০১৫ সালে। তা ছাড়া গত পাঁচ বছরে পুজোর কোনও না কোনও দিন বৃষ্টি হওয়ায় ভিজতে হয়েছে পুজো দেখতে বেরোনো দর্শনার্থীদের।
এ বার পুজোর আগে আগেই ‘তিতলি’র আগমনে স্বাভাবিক ভাবেই সকলের মনে প্রশ্ন জাগছে, পুজোর ক’টা দিন শুকনো থাকবে তো? আলিপুর আবহাওয়া দফতরের অবশ্য আশ্বাস, এখনও পর্যন্ত যা পরিস্থিতি তাতে পুজোর ক’টা দিন বৃষ্টির ‘বিপদে’ পড়তে হবে না মানুষকে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তথ্য বলছে, ২০১৩ সালে ১১ অক্টোবর সপ্তমীর দিন কোনও বৃষ্টি হয়নি। পরের দিন, অষ্টমীতেও কোনও বৃষ্টি হয়নি। বৃষ্টি শুরু হয়েছিল নবমী থেকে। ওই দিন কলকাতায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল ১০.৬ মিমি। পুজোর শেষ দিন, ১৪ অক্টোবর বৃষ্টি হয়েছিল ৮৩.৮ মিমি! সে দিন শহর ছিল প্রায় জলমগ্ন। তবে ওই মাসের সব থেকে বেশি বৃষ্টি হয়েছিল ২৬ তারিখ, ১০৯.৫ মিমি।
তার পরের বছর ২০১৪ সালে পুজোর প্রতিদিনই বৃষ্টি হয়েছিল। যদিও বৃষ্টির পরিমাণ খুব বেশি ছিল না। পয়লা অক্টোবর, সপ্তমীতে বৃষ্টি হয়েছিল ৮.৬ মিমি। তার পরের তিনদিনও কম-বেশি বৃষ্টি হয়েছিল। ওই মাসে সর্বাধিক বৃষ্টি হয়েছিল ৮ তারিখ, ১৪.৮ মিমি।
২০১৬ সালের পুজোর ক’টা দিনও বৃষ্টিতে ভিজতে হয়েছিল পুজো দেখতে বেরোনো জনতাকে। ৮ অক্টোবর, সপ্তমী থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল। তিন দিন উইকেট আঁকড়ে পড়ে থেকে বর্ষা সে বছর ভালই রান করেছিল। ঘটনাচক্রে দশমীতে, অর্থাৎ ১১ অক্টোবর যে পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছিল, তাই ছিল অক্টোবর মাসের সর্বাধিক বৃষ্টিপাত, ৫০.৩ মিমি।
গত বছর পুজো পড়েছিল সেপ্টেম্বর মাসে। ২৭ সেপ্টেম্বর, সপ্তমীতে কোনও বৃষ্টি হয়নি। পরের দিনগুলোতেও বৃষ্টিপাত বলতে গেলে প্রায় হয়নি।
আবহাওয়া দফতরের তথ্য জানাচ্ছে, চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের স্বাভাবিক পরিমাণে ঘাটতি রয়েছে। পয়লা জুন থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অর্থাৎ বর্ষার মরসুমে কলকাতায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ হল ১২১৭.৮ মিমি, স্বাভাবিকের থেকে যা পাঁচ শতাংশ কম। তার পরবর্তী সময়ে অর্থাৎ পয়লা অক্টোবর থেকে বর্ষার পরবর্তী মরসুম শুরু হয়। পয়লা অক্টোবর থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত শহরে বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ১৭.৮ মিমি, স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের থেকে যা ৭৮ শতাংশ কম। তবে এটাকে বেশি গুরুত্ব দিতে নারাজ আবহবিদদের একাংশ। এক আবহবিদের কথায়, ‘‘আগামী দু’তিন দিন ভাল বৃষ্টি হতে পারে। ফলে ঘাটতি যা রয়েছে, তার অনেকটাই পুষিয়ে যেতে পারে।’’
এ বছর সপ্তমী, ১৬ অক্টোবর এবং দশমী ১৯ অক্টোবর। পুজোর এই ক’টা দিন বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেই জানাচ্ছে আবহাওয়া দফতর। আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাস বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত যা পূর্বাভাস তাতে পুজোর ক’টা দিন আবহাওয়া পরিষ্কার থাকবে।’’