প্রতীকী চিত্র।
করোনা-পর্বে হাওড়ায় রেলের কারখানায় কাজ করতে গিয়ে ডান হাতের বুড়ো আঙুল কাটা পড়েছিল এক কর্মীর। সেই আঙুল শুধু জোড়া লাগানোই নয়, সেটিকে আবার আগের মতো নড়াচড়া করার
অবস্থায় ফিরিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসকেরা। শরীরের প্রায় ৭০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া এক কিশোরের অস্ত্রোপচারের পরে তাকেও স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দেওয়া গিয়েছে। মুখ, জিভ, চোয়াল বা স্তনের ক্যানসারে আক্রান্ত হলে অনেককেই অস্ত্রোপচারের একাধিক পর্ব
পেরোতে হয়। তাতে শরীরের সংক্রমিত অংশ বাদও পড়ে। সেই সমস্ত রোগীকেও প্রায় স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের গার্ডেনরিচ হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগ। পূর্ব
ভারতে রেলের সব ক’টি হাসপাতালের মধ্যে প্লাস্টিক সার্জারির ক্ষেত্রে উৎকর্ষের জন্য ‘স্পেশ্যালিস্ট
সেন্টার’-এর মর্যাদা পেয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের ওই হাসপাতাল। পূর্ব রেল, দক্ষিণ-পূর্ব রেল, উত্তর সীমান্ত রেল ছাড়াও পূর্ব উপকূল রেলের বিস্তীর্ণ এলাকা থেকে রোগীরা সেখানে আসছেন বলে রেল সূত্রের খবর।
গত ১৫ জুলাই ‘বিশ্ব প্লাস্টিক সার্জারি দিবস’ উপলক্ষে সম্প্রতি টানা এক সপ্তাহ সচেতনতা প্রসারের বিশেষ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ওই হাসপাতাল। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান অঞ্জনা মলহোত্র বললেন, ‘‘প্লাস্টিক সার্জারির সঙ্গে অনেকেই কসমেটিক সার্জারিকে গুলিয়ে ফেলেন। এটা খুবই ভুল ধারণা। বহু ক্ষেত্রে জটিল কোনও অস্ত্রোপচারের পরে রোগীর অঙ্গহানি ঘটে। বড়সড় দুর্ঘটনার জেরেও তা হতে পারে। সেই পরিস্থিতিতে ত্বক, পেশি ও রক্তবাহগুলি আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে এনে রোগীকে স্বাভাবিক জীবনে আনাটাই সব চেয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জ । সেটাই করার চেষ্টা করি আমরা।’’
যে সব শিশু জন্মগত বিভিন্ন ত্রুটি, যেমন কাটা ঠোঁট নিয়ে জন্মায়, তাদের ক্ষেত্রেও বিশেষ শিবিরের আয়োজন করে অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করেছে দক্ষিণ-পূর্ব রেল। করোনা-পর্বে ওই শিবির বন্ধ থাকলেও বছর দুই আগেও তা নিয়মিত ভাবে করা হয়েছে। একাধিক দুর্ঘটনায় হাত ও পায়ের মাংসপেশির গুরুতর ক্ষতি হওয়া রোগীদেরও সারিয়ে তুলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে দিয়েছে ওই হাসপাতাল।