—প্রতীকী ছবি।
তোলা চাওয়াকে কেন্দ্র করে বচসা, না কি সিন্ডিকেটের পাঁচতলা ভবন ঘিরে কোনও ব্যক্তিগত শত্রুতা?— তিলজলায় ব্যবসায়ীকে খুনের তদন্তে নেমে এই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছে
পুলিশ। ওই খুনের ঘটনায় ধৃত এক জনকে জেরা করে দেনা-পাওনা সংক্রান্ত পুরনো শত্রুতার তত্ত্বই আরও জোরালো হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। তবে, মূল অভিযুক্ত আলা-সহ বাকিদের গ্রেফতার করে নিশ্চিত ভাবে এই প্রশ্নের উত্তর পেতে চাইছে পুলিশ।
গত রবিবার দুপুরে তিলজলা থানা এলাকার পঞ্জাব গলিতে প্রকাশ্যেই ব্যবসায়ী সাদেক খানকে মারধরের অভিযোগ ওঠে। তাঁকে বন্দুকের বাঁট, লাঠি, রড, হকি স্টিক দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এমনকি, গোলমাল ঠেকাতে এলে সাদেকের ভাইপো সামির খানকেও মারধর করা হয়। বুধবার সকালে হাসপাতালে মৃত্যু হয় সাদেকের। মারধরের ঘটনার তাঁর পরিবারের সদস্যেরা রবিবার রাতেই তিলজলা থানায় আলা-সহ চার জনের নামে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পরিবারের অভিযোগ, তোলা না দেওয়ার কারণেই পরিকল্পনা করে খুন করা হয়েছে ওই ব্যবসায়ীকে।
ঘটনার তদন্তে নেমে বুধবার সন্ধ্যায় আব্দুল মান্নান নামে এক জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ধৃতকে আলিপুর আদালতে তোলা হলে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। ধৃতকে জেরা করে ব্যবসায়ীর মৃত্যুতে একাধিক তথ্য পেয়েছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রের খবর, পাঁচ বছর আগে সিন্ডিকেটের কাজ
করতেন সাদেক। তিলজলা এলাকাতেই একটি পাঁচতলা ভবন তৈরি করেছিলেন। সেই ভবন ঘিরেই আলার সঙ্গে সাদেকের বিবাদের সূত্রপাত বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে পুলিশ। ওই ভবনের অংশীদারি নিয়ে বিবাদের আশঙ্কাও উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। যদিও সাদেকের পরিবারের দাবি, ওই ভবনে আলার কোনও অংশীদারি ছিল না। বৃহস্পতিবার সামির বলেন, ‘‘রাস্তায় আড্ডা মেরে সময় কাটাত আলা। তাই তাকে দেখাশোনার কাজ দিয়েছিল কাকা। এর বেশি কিছু নয়।’’
পুলিশ যদিও জানিয়েছে, সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শুধুই ভবনের দেখাশোনা, না কি তাতে ইমারতি দ্রব্য সরবরাহ করেছিল আলা— তা আপাতত তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তবে, এই ঘটনা শুধুই তোলা চাওয়াকে কেন্দ্র করে বিবাদ ও মারধরের জেরে, প্রাথমিক ভাবে এমনটা মনে করছেন না তদন্তকারীরা। এই খুনের পিছনে দীর্ঘ দিনের কোনও শত্রুতা কাজ করেছে বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান করছে পুলিশ। সেই সঙ্গে কেন সাদেক হঠাৎ সিন্ডিকেটের ব্যবসা ছেড়ে কাপড়ের ব্যবসা শুরু করতে গেলেন, সেই উত্তরও পেতে চাইছে পুলিশ। এক তদন্তকারী আধিকারিক বলেন, ‘‘ধৃতকে জেরা করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পুরনো কোনও বিবাদ বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এর পিছনে আরও কোনও কারণ ছিল কি না, তদন্তে সেটাও খতিয়ে দেখা হবে।’’