প্রতীকী ছবি
রবীন্দ্র সরোবর থানা এলাকায় একটি ক্যাফের কর্মীর মৃত্যুর তদন্তে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে মৃতের পরিবার। গত ২৫ অগস্ট ওই ক্যাফের শৌচাগার থেকে রোহিত অধিকারী (২৪) নামে এক কর্মীর ক্ষতবিক্ষত দেহ উদ্ধার হয়েছিল। কিন্তু মৃতের শরীরে ১২টি আঘাতের চিহ্ন থাকলেও প্রাথমিক ভাবে একে আত্মহত্যার ঘটনা বলে পুলিশ দায় ‘এড়িয়ে’ যেতে চেয়েছিল বলে অভিযোগ মৃতের পরিবারের। তাই এই মৃত্যু আদতে খুন না আত্মহত্যা, তা জানতে ইতিমধ্যেই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে তারা। এই ঘটনায় আদালত আগামী ৮ অক্টোবরের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশকে।
যদিও এ বিষয়ে লালবাজারের এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘ঘটনার পরেই মামলা শুরু হয়। সিসি ক্যামেরার ফুটেজও দেখা হয়েছে। লালবাজারের গোয়েন্দা, ফরেন্সিক দল ঘটনাস্থলে যায়। যদি কেউ মনে করেন পুলিশের তরফে কোনও গাফিলতি ছিল, তা হলে তা খতিয়ে দেখা হবে।’’
রোহিতের পরিবারের দাবি, এক সঙ্গীর সঙ্গে রোহিত একটি ক্যাফে খুললেও লকডাউনে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। তখন রবীন্দ্র সরোবরের কাছে ওই ক্যাফেতে কাজ শুরু করেন তিনি। কিন্তু সেখান থেকেই তাঁর দেহ উদ্ধারে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। রোহিতের বাবা প্রদীপ অধিকারী বলেন, ‘‘ঘটনার পরে ওই ক্যাফে থেকে ফোন করে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। রোহিতের এক বন্ধুকে ভিডিয়ো কল করে জানানো হয়। তাঁর থেকেই আমরা খবর পাই। দীর্ঘ ক্ষণ পড়ে থাকলেও রোহিতকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়নি।’’ প্রদীপবাবুর আরও অভিযোগ, ঘটনার দিন ক্যাফে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করতে গেলে প্রথমে তা নেওয়া হয়নি। পরে ১ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গ্রহণ করা হয়। এমনকি পুলিশের তরফে ময়না-তদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট পরিবারকে দেওয়া হয়নি বলেও দাবি তাঁর। যদিও এ বিষয়ে থানার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘মৃতদেহের ময়না-তদন্তের পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট এখনও আসেনি।’’
এই ঘটনার দিন পাঁচেকের মধ্যেই সাফাই করে ক্যাফেটি ফের খুলে যাওয়ায় তথ্যপ্রমাণ নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে মৃতের পরিবার। তাদের পক্ষের আইনজীবী দিব্যেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ঘটনার পাঁচ দিনের মধ্যেই ক্যাফে খুলে গেল। খুন না আত্মহত্যা সেটা নিয়েই ধোঁয়াশা রয়েছে, সেখানে কী করে ক্যাফেটি খুলে দেওয়া হতে পারে?’’ ক্যাফেটির অন্যতম এক কর্ণধারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও জানান, ক্যাফেটি খোলা রয়েছে। কিন্তু ময়না-তদন্তের রিপোর্টে রোহিতকে খুন করা হয়েছে বলে জানা গেলে সে ক্ষেত্রে ঘটনাস্থল থেকে নতুন করে কোনও তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করা আদৌ সম্ভব হবে কি না, সেই প্রশ্ন তুলছে মৃতের পরিবার। যদিও রবীন্দ্র সরোবর থানার ওই আধিকারিক বলেছেন, ‘‘ঘটনাস্থল থেকে ফরেন্সিক দল সব তথ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করেছে।’’