প্রতীকী ছবি।
‘যৌন হেনস্থা’ অথবা ‘যৌন হেনস্থার চেষ্টা’র অর্থ বোঝেন কি অভিযোগকারীরা, প্রশ্ন তুলল শিয়ালদহ আদালত।
গাড়ি রাখা নিয়ে দু’টি পরিবারের মধ্যে গোলমালের জেরে ট্যাংরা থানায় বুধবার, লক্ষ্মীপুজোর দিন দু’পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা ও যৌন হেনস্থার চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করে। সেই মামলারই শুনানিতে অভিযোগকারী দুই মহিলাকে আদালতে হাজির করিয়ে বিচারক ইন্দ্রনীল চক্রবর্তী বৃহস্পতিবার মন্তব্য করলেন, ‘‘শ্লীলতাহানি বলতে কী বোঝায় জানেন? মহিলাদের সম্মান বাঁচাতে আইন রয়েছে বলে এমন অভিযোগ যথেচ্ছ ভাবে ব্যবহার করা যায়?’’
সরকারি কৌঁসুলি অরূপ চক্রবর্তী এ দিন জানান, গাড়ি রাখা নিয়ে জনৈক যাদব পাত্রের পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী সৌমেন হালদারের পরিবারের বুধবার গোলমাল বাধে। ট্যাংরা থানার পুলিশ দু’পক্ষকে ডেকে ওই দিনই মিটমাট করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। থানায় বসে দু’পক্ষ নিজেদের ‘ভুল’ স্বীকারও করে নেয়। কিন্তু থানা থেকে বেরিয়ে ফের গোলমালে জড়ায় দু’পক্ষ। আবার পুলিশ তাদের থানায় ডেকে পাঠায়। পুলিশের সামনে দু’টি পরিবারই বচসায় জড়ায়। এক সময়ে এক পরিবারের তরুণী অন্য পরিবারের পুরুষদের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। যৌন হেনস্থার চেষ্টার পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন অন্য পরিবারের এক মহিলা। আইনজীবী অরূপবাবু জানান, এর পরে বুধবার রাতেই যাদব পাত্র ও সৌমেন হালদারকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার ধৃতদের আদালতে হাজির করানো হলে এফআইআর পড়ে অভিযোগকারী দুই মহিলাকে হাজির করানোর নির্দেশ দেন বিচারক। তাঁরা আদালতে হাজির হলেই ওই মন্তব্য করেন তিনি। বিচারক অভিযোগকারীর উদ্দেশে এও বলেন, ‘‘পুলিশ অভিযোগ না নিলে তার বিরুদ্ধে কর্তব্য না করার অভিযোগ উঠবে। আর আপনারা শ্লীলতাহানির অভিযোগ দায়ের করে পার পেয়ে যাবেন!’’
দু’টি পরিবারের বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে বিচারকের কাছে ধৃতদের পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানান সরকারি কৌঁসুলি। তিনি বলেন, ‘‘ধৃতদের জেরা করলেই বাকি অভিযুক্তরা কোথায় রয়েছেন, তা জানা যাবে।’’ বিচারক ধৃতদের ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।