প্রশ্ন: এই বাজার ঘিরেই বিতর্ক। ছবি: স্নেহাশিস ভট্টাচার্য
অগ্নিবিধি সুনিশ্চিত করে নকশা তৈরি। ব্যবসায়ীদের সম্মতি পেলে দমদমে পুড়ে যাওয়া গোরবাজারের সংস্কার করতে প্রস্তুত কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)। কিন্তু তা না মেলায় পুড়ে যাওয়া বাজারের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে।
গত ২২ জানুয়ারি বিধ্বংসী আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যায় পুর বাজারের কয়েকশো দোকান। দমবন্ধ হয়ে দু’জনের মৃত্যু হয়। ২০০৬ সালেও আগুনের গ্রাসে চলে গিয়েছিল গোরবাজার। যার প্রেক্ষিতে অগ্নিবিধির কথা মাথায় রেখেই নকশা তৈরি করেছেন কেএমডিএ-র ইঞ্জিনিয়ারেরা। সংস্থা সূত্রের খবর, প্রস্তাবিত নকশায় বাজারের চেহারায় কিছু পরিবর্তন আনতে হয়েছে। ঘিঞ্জি ওই এলাকায় আগুন নেভাতে গিয়ে বেগ পেয়েছিলেন দমকলকর্মীরা। জলের অভাব আগুন মোকাবিলার কাজকে কঠিন করে তুলেছিল। তাই প্রস্তাবিত নকশায় জলাধার, চওড়া রাস্তা এবং বাজারের বৈদ্যুতিন ব্যবস্থার আধুনিকীকরণের উপরে বেশি জোর দেওয়া হয়েছে। তবে অগ্নিকাণ্ডের চার মাসের মাথায় দমদম পুরসভার কাছে প্রস্তাবিত নকশা পাঠালেও এখনও পর্যন্ত কাজ শুরুর সম্মতি মেলেনি।
কী রয়েছে প্রস্তাবিত নকশায়? কেএমডিএ-র এক আধিকারিক জানান, বাজারের নীচে থাকবে বেসমেন্ট পার্কিং। একতলায় মাছবাজার, আনাজ বাজার-সহ বেশির ভাগ দোকান থাকবে। আগুন লাগলে দমকলের ইঞ্জিন ঢুকতে যাতে সমস্যা না হয়, সে জন্য কিছু দোকান দোতলায় চলে যাবে। প্রস্তাবিত বহুতলের অন্য তলাগুলি কমিউনিটি হল এবং বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহারের কথা ভাবা হয়েছে। ওই আধিকারিকের কথায়, ‘‘দু’বার যে বাজারে আগুন লেগেছে সেখানে অগ্নিবিধি তো সুনিশ্চিত করতেই হবে। এর জন্য একটু অদল-বদল করতে হয়েছে। পুরসভা সম্মতি দিলে কাজ শুরু হবে।’’ কেএমডিএ-র এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পর্যাপ্ত রাস্তা, চওড়া সিঁড়ি করতে কিছু দোকান সরানোর কথা বলা হয়েছে। বিক্রেতাদের কথা ভেবে দু’টি লিফটও থাকছে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, এই অদল-বদল নিয়ে ব্যবসায়ীদের ঐক্যমত আদায় করা যাচ্ছে না। যার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পুরপ্রধান হরীন্দ্র সিংহ। গোরবাজারের একটি ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘সংস্কার চলাকালীন আমাদের ব্যবসার কী হবে? এখন যেখানে দোকান রয়েছে তা ছাড়তে রাজি নন অনেকে।’’ অন্য একটি ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা দেবাশিস দত্ত বলেন, ‘‘বাজারের একটি বাড়ি বিপজ্জনক হওয়ায় ভাঙতে হয়েছে। আমাদের আধুনিক বাজার তৈরির প্রস্তাবে আপত্তি নেই।’’
পুরপ্রধান বলেন, ‘‘ব্যবসায়ীদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু হবে না। তাঁরা কী চাইছেন তা জানাতে বলা হয়েছে। তাঁরা প্রস্তাবে রাজি না হলে ভবিষ্যতে দুর্ঘটনা ঘটলে প্রশাসন যে দায়ী থাকবে না তা-ও লিখিত দিতে হবে।’’