সেই নির্দেশিকা।
আপাদমস্তক ঝাড়পোছ করে রঙের প্রলেপ! কিন্তু চড়া ‘মেক-আপ’ করলেই কি আর রুগণ্ চেহারা ঢাকা যায়? মঙ্গলবার বিকেলে মাঝেরহাট সেতু ভাঙার পরে সেই প্রশ্নই উঠছে বিভিন্ন মহলে।
কারণ, সেতু এবং কালভার্ট রং করার জন্য গত ১০ অগস্টই নির্দেশ দিয়েছে পূর্ত দফতর। ওই নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, পূর্ত দফতরের কর্তারা পর্যবেক্ষণ করে দেখেছেন, সেতু বা কালভার্টের মান যথার্থ নয় (নট আপ টু দ্য মার্ক)। সে জন্য পূর্ত দফতরের অধীনে থাকা সেতু এবং কালভার্টগুলি পরিষ্কার করে রং করতে হবে। অভিযোগ, সেতু-কালভার্টের রক্ষণাবেক্ষণকে কার্যত ততটা গুরুত্ব না দিয়ে সেখানে বলা হয়েছে, ‘যদি সংস্কারের প্রয়োজন পড়ে’, তা হলে সেই কাজ দ্রুত শুরু করতে হবে। তবে কোন রং দিতে হবে, তা বলা হয়নি নির্দেশিকায়।
অবশ্য দফতরের এক কর্তার কথায়, ‘‘হেরিটেজ বাদে রাজ্যের সরকারি সম্পত্তিতে নীল-সাদা রংই দেওয়া হয়। ওটাই তো রাজ্যের সরকারি রং হয়ে গিয়েছে! এ ক্ষেত্রে সেতু বা কালভার্টে কী রং হবে, তা নিয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশ না থাকলেও তেমনই হয়তো হবে।’’ তবে দফতরের অন্য কর্তাদের ব্যাখ্যা, রাজ্যের অনেক সেতুই আছে, যা ঠিক মতো চোখে পড়ে না। কোথাও সেতুর কোনও অংশ জঞ্জালে ঢাকা। সে কারণে রঙের প্রলেপ পড়লে দূর থেকে সেতু বা কালভার্ট বুঝতে সুবিধা হবে বলে মত তাঁদের। যদিও অনেকেরই প্রশ্ন, নিয়মিত নজরদারির বদলে শুধু জঞ্জাল পরিষ্কার করে রং করলেই সেতুর স্বাস্থ্য ফিরবে?
আরও পড়ুন: মধ্যরাতে মানুষের গন্ধ খুঁজছে স্নিফার ডগ
মাঝেরহাট সেতু ভাঙার পরে সেতুতে নীল-সাদা রং করা নিয়ে সরকারকে যেমন নিশানা করছেন বিরোধীরা, তেমনই সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘোর শ্লেষ। কারও ব্যঙ্গ, ‘বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে প্রমাণ করে দিয়েছেন, যে পুরনো ব্রিজের সংস্কারে কংক্রিট এবং টিএমটি বার ব্যবহার না করে নীল-সাদা রং করে দিলে স্থায়িত্ব ১০০ বছর বেড়ে যায়’। কেউ লিখেছেন, ‘ব্রিজের রেলিংয়ে নীল-সাদা রং করার বদলে পরিকাঠামোয় টাকা দিলে এই ভয়ঙ্কর ঘটনাটা ঘটত না বোধ হয়..’। আবার কারও কটাক্ষ, ‘ভেবেছিলুম, রং দেখেই তোরা সবাই সাবধান হয়ে যাবি রে!’ একজন নেটিজেন রবীন্দ্রনাথের গানের লাইন ধার করে পোস্ট করেছেন, ‘রাঙিয়ে দিয়ে যাও, যাও, যাও গো এবার, যাবার আগে’! ‘যাবার আগে’ শব্দদু’টি গাঢ় রংয়ে রাঙানো।