প্রতীকী ছবি
আদালতের নির্দেশ উপেক্ষা করে বাজি বিক্রি করলে বা পোড়ালে বিস্ফোরক আইনের আওতায় পড়বেন বিক্রেতা ও ক্রেতা উভয়েই। যার শাস্তি তিন বছর পর্যন্ত হাজতবাস এবং মোটা অঙ্কের জরিমানা। করোনা-যুদ্ধে হাইকোর্টের বাজি-দূষণের রায় বলবৎ করতে এ ভাবেই তারা কড়া হচ্ছে বলে দাবি কলকাতা পুলিশের।
সুতরাং কালীপুজো এবং দীপাবলির রাতে বাজি বিক্রি বা ফাটানোর আগে জেনে রাখতে হবে, পুলিশের হাতে ধরা পড়লে কী শাস্তি হতে পারে! লালবাজার সূত্রের খবর, বাজি-সহ কেউ ধরা পড়লে তাঁর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনের ৯বি (১) (সি) ধারায় মামলা রুজু করতে বলা হয়েছে থানাগুলিকে। তিন বছর পর্যন্ত হাজতবাস ও মোটা অঙ্কের জরিমানার কথা রয়েছে ওই আইনে। এ ছাড়াও ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হবে।
এই ধারার প্রয়োগ নতুন নয়। তবে অন্যান্য বার কালীপুজোর দু’দিন নিষিদ্ধ শব্দবাজি ফাটালে ওই আইনে মামলা হত। এ বার যে কোনও বাজি কেনাবেচা করলেই ওই মামলা দায়ের করা হবে বলে লালবাজার সূত্রের দাবি।
আরও পড়ুন: আহত যুবক, বিতর্কে পুলিশ
এক পুলিশকর্তা জানান, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, বিক্রেতারা কোনও ধরনের বাজি এ বার বিক্রি করতে পারবেন না। কেউ বাজি কিনলেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাজি বিক্রি বা ফাটানোর অভিযোগ জানাতে হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছে লালবাজার।
লালবাজারের হিসেব অনুযায়ী, বুধবার থেকে শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ৫০০০ কেজি বাজি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছেন ৩০ জন। বিস্ফোরক আইনে ২৮টি মামলা রুজু হয়েছে। হেয়ার স্ট্রিট, বড়বাজার থানা এলাকায় বাজি বেশি বিক্রি হত। পুলিশের দাবি, এ বার নজরদারি চালানোয় সেখানে বাজি বিক্রির পরিমাণ কমেছে। বৃহস্পতিবার রাতে ওই দুই থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার হন চার জন। নেতাজিনগর, জোড়াবাগান-সহ বিভিন্ন থানা এলাকার দোকান ও বাজারে মজুত বাজির বিরুদ্ধে অভিযান চলেছে।
পুলিশ জানিয়েছে শুক্রবারও শহরের বাজার, বসতি এলাকায় বাজির বিরুদ্ধে মাইকে প্রচার চালানো হয়েছে৷ এ দিন জনগণকে সচেতন করতে এলাকায় শোভাযাত্রা করেছে বাঁশদ্রোণী ও বৌবাজার থানা। বৌবাজার থানা কুকুরদের নিয়ে পদযাত্রা করেছে।
লালবাজার জানিয়েছে, নজর থাকবে বহুতলেও। আবাসনের ভিতরে বাজি পোড়ালে সংশ্লিষ্ট কমিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশি নজরদারি চালাতে অলিগলিতেও চলবে অটো। পুলিশকর্মীদের মতে, শনি এবং রবিবার দু’টি পরীক্ষা। একটি, বাজি ঠেকিয়ে আদালতের রায়কে মান্যতা দেওয়া, অন্যটি মণ্ডপের বাইরের ভিড় ঠেকানো।
পুলিশ নিজেদের পরিকল্পনায় কতটা সফল হয়, এখন সেটাই দেখার।