দেশকল্যাণ চৌধুরী
উত্তর
উত্তরায়ণ ক্লাব
এ বছর সুবর্ণ জয়ন্তী। সাবেকিয়ানার সঙ্গে মেলবন্ধন ঘটেছে আধুনিকতার। কাগজ, উল, সুতো প্রভৃতি জিনিসে মণ্ডপ হয়ে উঠবে সুন্দর। শিল্পী দেবাশিস মান্নার তৈরি প্রতিমা। পুজোর ক’টা দিন ভোগ বিতরণ, দরিদ্রনারায়ণ সেবা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি জমাটি আড্ডা তো থাকছেই।
শ্যামবাজার সর্বজনীন
৫৭তম বর্ষের মূল ভাবনা ‘মুখ মুখোশের মুখোমুখি’। জীবনের প্রবহমান স্রোতে মুখের পাশাপাশি চলে মুখোশের কীর্তিকলাপ। আমাদের মণ্ডপ সেজে উঠছে ছো নাচের মুখোশ, মাটির সরা, ঘণ্টায়। ভাবনার সঙ্গে মিল রেখে শিল্পী সৌমেন পালের তৈরি প্রতিমা। রূপায়ণে আছেন সুমন সাহা এবং সৌমেন পাল।
সাহিত্য পরিষৎ সর্বজনীন
প্রতি বছরের মতোই আমাদের প্রতিমা সনাতনী। তৈরি করছেন শিল্পী গোরাচাঁদ পাল। মণ্ডপের প্রবেশপথ তৈরি হবে ময়ূরের পালক দিয়ে। ভিতরে ভাসমান মেঘের প্রতিকৃতি তৈরি হবে। চতুর্থীতে উদ্বোধন। পঞ্চমীতে অবাঙালিদের জন্য থাকে দেবীর জাগরণ। বাকি দিনগুলিতে কীর্তন, ভোগ বিতরণ, পুষ্পাঞ্জলি তো থাকছেই।
বিডন স্ট্রিট সর্বজনীন
৭৬তম বর্ষের এই পুজো বরাবরের মতোই সাবেকিয়ানাকে বহন করে। মণ্ডপ হচ্ছে রাজবাড়ির আদলে। অন্দরসজ্জায় শোলা ও থার্মোকলের তৈরি মূর্তি থাকবে। শিল্পী নারায়ণচন্দ্র রুদ্র পালের তৈরি সাবেক প্রতিমা। থাকছে বিশেষ সন্ধিপূজা ও ভোগ বিতরণের ব্যবস্থা।
বিডন স্ট্রিট সঙ্কেত পল্লিবাসীবৃন্দ
প্রতিযোগিতা নয়, আমাদের ৪১তম বর্ষের মূল উদ্দেশ্য আন্তরিকতা। তাই জাঁকজমকের আড়ম্বর ছাড়াই ছোট-বড় সকলে হাতে হাত মিলিয়ে পুজোর প্রয়াসে সামিল আমরা। শিল্পী প্রদীপ পালের সাবেক দেবীমূর্তি সকলের মন জয় করবে আশা করছি। আর আমাদের পুজোর মূল ভাবনাই হল ছোটখাটো ঘরোয়া অনু্ষ্ঠান। সকলের মাঝে আনন্দ ভাগ করে নেওয়ার ইচ্ছেটুকু।
সরকার বাগান সম্মিলিত সঙ্ঘ
দেখতে দেখতে আমাদের পুজো শতবর্ষের দোরগোড়ায়। ৯৯তম বর্ষে আমরা ফিরে দেখব আমাদের শৈশবকে। ছোটদের চোখে মণ্ডপ সেজে উঠবে কোলাজ, পেন, পেন্সিল, বই, খাতা, হরেক খেলনা দিয়ে। শিল্পী পার্থ দাসের ভাবনায় প্রতিমাও যেন শিশুদের চোখে তৈরি। ঢাকের লড়াই, ভোগ বিতরণ, নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে পুজোপ্রাঙ্গণ হয়ে উঠবে মিলনমেলা। গোটা পাড়া জুড়েই বাজবে এই সুর— ‘বাবার মতো বড় হলে পড়ব প্রথম পাঠ/ আজ বল মা কোথায় আছে তেপান্তরের মাঠ!’
দক্ষিণ
সম্মিলনী (ভবানীপুর)
এই পুজো এ বার ৫৮ বছরে। চিরাচরিত পুজোই এর আকর্ষণ। পুরনো জমিদার বাড়ির দালানের আদলে মণ্ডপ। একচালা সাবেক প্রতিমা। পঞ্চমীর সন্ধ্যায় হবে ‘মহিষাসুরমর্দিনী’। বিশেষ আকর্ষণ অষ্টমীর ভোগ।
কালীঘাট নেপাল ভট্টাচার্য স্ট্রিট
৩৭তম বছরে আমাদের থিম ‘ঘণ্টেশ্বরী’। ওড়িশার সম্বলপুরের একটি প্রত্যন্ত গ্রামের মন্দিরের আদলে মণ্ডপ। সেই বিগ্রহের আদলে প্রতিমা। মণ্ডপ সাজবে কয়েক হাজার মাটির ঘণ্টায়। পুজোর কর্মসূচিতে থাকছে ‘গঙ্গা পরিষ্কার রাখুন’ প্রকল্প। থাকছে সন্ধ্যায় গঙ্গারতির আয়োজন। উদ্বোধন করবে ব্লাইন্ড স্কুলের পড়ুয়ারা। ওদের হাতে আমরা তুলে দেব নতুন পোশাক।
লেক ইয়ুথ কর্নার
এ বার পুজোর সুবর্ণজয়ন্তী। তাই থিম হচ্ছে ‘দ্য লস্ট সিটি’। থার্মোকল ও প্লাস্টার অব প্যারিসে হচ্ছে হারিয়ে যাওয়া শহরের ধ্বংসাবশেষ। ভাঙা দেওয়ালের মধ্যে গজিয়ে ওঠা গাছ ও বড় বড় শিকড় নেমে আসায় তৈরি হবে গা ছমছমে পরিবেশ। থাকবে একটি ভাঙা মন্দিরও। সোনালি রঙের প্রতিমা। আদিবাসী সুর, ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক ও ঘণ্টাধ্বনিতে থিমটি পূর্ণতা পাবে।
চেতলা সর্বসাধারণের দুর্গোৎসব
৯০তম বছরের থিম ‘পরিবর্তনের আলোর ফাঁকে, ভুলতে কি পারি অতীতটাকে?’। আদিগঙ্গার কাছেই পুজো। আদিগঙ্গার একটি ঘাট থিমের মধ্যে জুড়েছি। মণ্ডপ পুরনো নাটমন্দিরের আদলে। বাঁশ ও চটের উপরে প্লাস্টার অব প্যারিস দিয়ে এই কাজ হচ্ছে। প্রতিমা সাবেক। উদ্বোধনী সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
বাঁশদ্রোণী শ্রী সঙ্ঘ
আমাদের পুজো সাবেক। এ বার পুজো ৬৩ বছরে। প্রতিমার সাজ সোনালি রঙের। নাটমন্দিরের আদলে মণ্ডপ সাজানো হবে ভিনাইল, কাচের অলঙ্করণে। সঙ্গে থাকছে কাঠের অলঙ্করণের কাজও। আমাদের পুজোর কাজে পাড়ার সবাই, বিশেষত মহিলারা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে যোগদান করেন। চার দিনই থাকে খাওয়াদাওয়ার আয়োজন।
অরুণোদয়অধিবাসীবৃন্দ
(বাঘা যতীন)
গুটি গুটি পায়ে ছ’বছরে পৌঁছল আমাদের পুজো। প্রথম বার থিমের পুজো করার চেষ্টা করছি। রাংতার সাজে মা থাকছেন সাবেক রূপে। মণ্ডপ সাজবে পটচিত্র এবং ত্রিশূল দিয়ে। নানা অস্ত্র, শঙ্খ, মায়ের বাহন, পুজোর উপচার আঁকা থাকছে পটগুলির উপরে। মণ্ডপের দেওয়ালে সাজানো থাকবে এগুলি। এ ছাড়া মণ্ডপে থাকছে ত্রিশূলের তৈরি একটি ইনস্টলেশনও। প্লাই ও ধাতব রঙের ত্রিশূলগুলি সাজানো হবে নানা রঙের কাপড় জড়ানো বাঁশের উপরে।